ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরাতে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ডাক দিল পরিবহণ দফতর , ধর্মতলা থেকে সরে যাবে বাস টার্মিনাস, ভোগান্তি বাড়বে জনতার? আগামী সোমবার কসবার পরিবহণ ভবন-২-তে এই বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই বৈঠকে রাজ্যের বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের নেতৃত্বকে তলব করা হয়েছে। মূলত বেসরকারি বাস পরিষেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদেরই এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। কারণ, এই বাস টার্মিনাস সরানো নিয়ে পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বেসরকারি বাসমালিকেরা। তাঁদের যুক্তি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নিতে আমরা বাধ্য। কিন্তু পরিবহণ দফতর যেন পরিবহণ পরিষেবার কথা মাথায় রেখে যাত্রী ওঠানামার বিকল্প ব্যবস্থা করে। না হলে অসংখ্য মানুষের ভোগান্তি হবে। হাই কোর্টের নির্দেশে এসপ্ল্যানেড এলাকা থেকে বাস টার্মিনাস সরানোর কথা বলা হয়েছে। তাই সেখান থেকে বাস টার্মিনাস সরিয়ে কেবলমাত্র যাত্রী ওঠানামার জন্য ব্যবহার করার ভাবনায় পরিবহণ দফতর। সোমবারের বৈঠকে সেই প্রস্তাব বেসরকারি বাসমালিকদের দিতে চলেছে বলেই পরিবহণ দফতর, এমনটাই সূত্রের খবর। সঙ্গে বিকল্প বাস টার্মিনাস কোথায় করা যেতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। ইতিমধ্যে ধর্মতলায় বাসস্ট্যান্ড নিয়ে রাইটসকে দিয়ে সমীক্ষা করানোর কাজ শুরু হয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিকল্প বাস স্ট্যান্ড এবং অন্যান্য যানবাহনের ‘মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট হাব’ তৈরির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে তারা।
শুক্রবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত বিষয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু করার জন্য ইতিমধ্যেই রাইটসকে বরাত দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনী, মেট্রো রেল, পূর্ত দফতর, কলকাতা পুরসভা-সহ সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৬ সপ্তাহ পর ফের এই মামলার শুনানি হবে। তার আগেই এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে পরিবহণ দফতর।
আরও পড়ুন – তৃণমূলের তারকা সাংসদ তথা অভিনেত্রী নুসরাতের বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন ‘কালারফুল’ মদন
কারণ, এ বার আর কালবিলম্ব না করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড সরিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। জুলাই মাসে এ নিয়ে নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিবের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে কলকাতা পুলিশ, নগরোন্নয়ন দফতর, কলকাতার পুর কমিশনার, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, বিদ্যুৎ দফতর, পূর্ত দফতর, সেনা, কলকাতা মেট্রো, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন এবং সমীক্ষা সংস্থা রাইটস-এর শীর্ষকর্তারা হাজির ছিলেন। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই কমিটির মাধ্যমে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হবে বলে নবান্ন সূত্রের খবর ছিল। ধর্মতলা তথা এসপ্ল্যানেড চত্বরের একটি বড় অংশ জুড়ে ওই বাস স্ট্যান্ড থাকার কারণে শহরে যানজট এবং দূষণ অনেকাংশে বাড়ছে বলে অভিযোগ। তাই সেখান থেকে ওই বাস স্ট্যান্ড সরিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। বর্তমানে ওই মামলা বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে বিচারাধীন।