শিলিগুড়িতে সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্র উৎসব ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা। নির্দিষ্ট সংখ্যক দর্শক আসন পেড়িয়ে চলচ্চিত্র উৎসব শুরুর আগেই অতিরিক্ত আসনের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। আগামী ১২ই জানুয়ারি বিকেল ৫.৩০টা নাগাদ চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সুপুত্র সন্দ্বীপ রায়ের হাতে হবে শিলিগুড়ি চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন।
আধুনিক প্রযুক্তির বড় পর্দায় এবারে নস্টালজিয়ায় ভরা পথের পাঁচালি থেকে হীরক রাজার,সোনার কেল্লা সহ সত্যজিৎ রায়ের অবিস্বরণীয় সৃষ্টির ১৬টি সিনেমা দেখার সুযোগ মিলছে টিকিট মূল্য ছাড়াই। নন্দনের ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আধুনিক পর্দায় এবারে শিলিগুড়ি শহরের বুকে চলচ্চিত্র উৎসবে দেখা যাবে সত্যজিৎ রায়ের একের পর এক অবিস্বরণীয় সৃষ্টি। শিলিগুড়িতে মহারাজা তোমারে সেলাম এই শিরোনামকে সামনে রেখেই শতবর্ষে সত্যজিৎ রায়কে স্বরন ও সম্মান জানাতে চলচ্চিত্র উৎসব হতে চলেছে।
শিলিগুড়ি দীনবন্ধু মঞ্চ উপদেষ্টামন্ডলী ও রাজ্য সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের সহযোগিতা এই উৎসবের আয়োজন। ১২ই জানুয়ারি থেকে ২১শে জানুয়ারি পর্যন্ত শহরে সিনেমার স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়কে ঘিরে চলবে উৎসবের আমেজ। প্রায় দশদিন ব্যাপী ১৬টি ছবির ১৮টি শো হবে শহরে। মঙ্গলবার রামকিংকর হলে সাংবাদিক বৈঠক করে শিলিগুড়ির মহানাগরীক তথা দীনবন্ধু মঞ্চ উপদেষ্টা কমিটি গৌতম দেব বলেন রাজ্য সরকারের কাছে সত্যজিৎ রায়ের যে সমস্ত ছবি রয়েছে তার প্রায় অধিকাংশই দেখানো হবে।
১২ই জানুয়ারি একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাও হবে। উদ্বোধনে থাকবেন চলচ্চিত্রকার সন্দ্বীপ রায়। আগামী ১৫ই জানুয়ারি রবিবার ১১টার সময় সত্যজিৎ রায়কে একটি সেমিনার হবে। যেখানে বরুণ চন্দ ও লেখক চলচ্চিত্র বক্তা ও অধ্যাপক সঞ্জয় মুখার্জি উপস্থিতি আলোকপাত করবেন রায়ের অবিস্বরণীয় সৃষ্টির ওপর। উদ্বোধনী শোতে দেখানো হবে ঘরে বাইরে। এছাড়া প্রায় দশ দিন ব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসবে
সোনার কেল্লা, জয়বাবা ফেলুনাথ, প্রতিদ্বন্দ্বী, জলসাঘর, পথের পাঁচালি,অপরাজিত, অপুর সংসার, মহানগর, নায়ক, পরশপাথর, হীরক রাজার দেশে, চারুলতা, গুপি গাইন বাঘা বাইন, অরণ্যের দিন রাত্রি দেখার সুযোগ মিলবে।
টিকিট সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সিনেমা প্রেমীরা সংগ্রহ করতে পারবেন।বিকেল ৪টে ও ৭টা নাগাদ দুটি শো টাইম রাখা হয়েছে। শহরের পাচঁটি বোরো অফিস, ইকোনোমিক পুস্ককালয়,এছাড়া দীনবন্ধু মঞ্চের কাউন্টারে মিলবে। মেয়র বলেন- দীনবন্ধু মঞ্চের প্রজেক্টের বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে। যাতে চলচ্চিত্র উৎসবের মুখে কিছুটা বিপাকে পড়তে হয়। কলকাতা তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের তরফে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা এসে বিষয়টি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সারা এর চেষ্টা করেন তবে বেশ কিছু জিনিসপত্র বিদেশ থেকে আনাতে হবে।
আরও পড়ুন – বিজেপির গঙ্গা আরতিকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বাবুঘাট
তাই এবারে নন্দনে যে পর্দায় চলচ্চিত্র উৎসব দেখানো হয়েছিল সেই আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন প্রজেক্টরই শিলিগুড়ির চলচ্চিত্র উৎসবে ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি মেয়র বলেন উৎসব শুরুর আগেই অপ্রত্যাশিত সাড়া মিলছে। টিকিট বন্টনের পরও আমরা দীনবন্ধু মঞ্চের ব্যালকনির আসন সংরক্ষিত রেখেছিলাম তবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সে টিকিটও দর্শকদের জন্য ছাড়া হচ্ছে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান শহরটাকে সংস্কৃতিমনস্ক ক্রিড়া মনস্ক করে তুলতে বিভিন্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে তারই চেষ্টা করছি বলে জানান তিনি।