রাজ্যে জুড়ে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক অভিষেকের, রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে, পুরসভায় যেখানে যত বিজেপি নেতা আছেন, তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করার কর্মসূচির ডাক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাই শহিদ দিবসের সভা মঞ্চে বক্তৃতা করার সময় এই ঘোষণা করলেন অভিষেক। ‘দলনেত্রীর অনুমতি’ নিয়ে আগামী ৫ অগস্ট, শনিবার সেই কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দলীয় কর্মীদের দিয়েছেন তিনি। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা অবধি বাড়ি ঘেরাও করার কথা বলেছেন। ‘বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে’ শান্তিপূর্ণ ভাবে এই কর্মসূচি পালনের জন্য কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। শুধুমাত্র বিজেপি নেতাদের ওই বাড়িতে বাড়িতে ঢুকতে বা বেরতে বাধা দিতে বলেছেন তিনি। কিন্তু পদ্মশিবিরের নেতাদের বাড়ির বয়স্ক মানুষদের যেন কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে বলেছেন তিনি।
অভিষেকের বক্তব্যের পর শহিদ সমাবেশে বক্তব্য রাখতে ওঠেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কী ভাবে করা হবে, তার নির্দেশ দেন দলীয় কর্মীদের। মমতা বলেন, “বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করবে। বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে করবে। ইলেকশনে যেমন ১০০ মিটার দূরে ক্যাম্প হয়। যাতে কেউ বলতে পারবে না অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এটা একটা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলবে।” এর পরই এই কর্মসূচির কারণ ব্যাখ্যা করেছেন দলনেত্রী। বলেছেন, “কারণ বিজেপি নেতারা এখানে বলছে- ১০০ দিনের কাজের টাকা তো আমরা বন্ধ করে দিয়েছি, বাংলার আবাক যোজনার টাকা তো আমরা বন্ধ করে দিয়েছি, রাস্তার তৈরি টাকা তো আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। তোমরা যদি বন্ধ করে দাও, তোমরা তো সরকাও নও। তোমাদের জবাব দিতে হবে। তুমি ১০০ দিনের কাজের টাকা আগে দিল্লি থেকে টাকা নিয়ে এসো। বাংলায় বসে বলবে বাংলাকে ভাতে মারো। বাংলাকে ভাতে মারা যাবে না। বাংলা অনেক শক্তিশালী।”
আরও পড়ুন – কোন উদ্দেশ্যে সশস্ত্র যুবক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে? ভাবাচ্ছে পুলিশকে,চলছে তদন্ত
১০০ দিনের কাজের টাকার দাবিতে দিল্লি চলো কর্মসূচির আগে দলের কর্মীদের ‘ট্রেলার’ দেখাতে বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরই বিজেপি নেতার বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “৫ অগস্ট শনিবার বিজেপির ছোট, বড়, মাঝারি, সেজ, মেজ। বুথ থেকে অঞ্চল থেকে জেলা থেকে রাজ্য। যে কটা নেতা আছে আপনার ব্লকে, একটা তালিকা তৈরি করুন। ৫ অগস্ট শান্তিপূর্ণ ভাবে এদের বাড়ি ঘেরাও করুন। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা অবধি বাড়ি ঘেরাও করুন। বাড়িতে যদি বয়স্ক কেউ থাকেন রাস্তা ছেড়ে দেবেন। কিন্তু বিজেপির নেতা যাঁরা আছেন, তিনি বাড়িতে ঢুকবেন না বেরবেন না। শান্তিপূর্ণ ভাবে করবেন। কারও প্রচারে পা দেবেন না। কারও গায়ে হাত দেবেন না।” এর পর দলনেত্রীর অনুমতির প্রসঙ্গে বলেছেন, “কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত ৩৪১টি ব্লক, সব পুরসভা, বুথে এই কর্মসূচির ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে ঘোষণা করলাম।”