উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের ‘দুষ্টুমি’ হাতেনাতে ধরবে এক যন্ত্র! প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে টুকলি— পরীক্ষার হলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তার আগে রাজ্যের সবচেয়ে সমস্যসঙ্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করেছে তারা। উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা কেন্দ্রে এ বছর থাকবে এক নতুন পাহারাদার। সেই পাহারাদারও নজর রাখবে পরীক্ষার্থীদের উপর। তবে পরীক্ষার খাতায় নয়। বেআইনি ভাবে পরীক্ষার হলে মোবাইল নিয়ে ঢুকলেই তাকে খপ করে ধরে ফেলবে এই নতুন নজরদার। নাম রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর। ডাকনাম আরএফডি।
শুক্রবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে যদি কোনও পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। তবে সেই পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে এবং সে ভবিষ্যতে আর কখনওই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারবে না।
আরও পড়ুন – অনুব্রতহীন বীরভূম !কী হবে আগামী দিন?কলকাতায় ফিরহাদের দ্বারে বীরভূমের তৃণমূল নেতা কাজল…
আগামী মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। শেষ হবে ২৭ মার্চ। ছাত্র ছাত্রীরা সকাল ১০টা থেকে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত নির্দিষ্টকেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, রাজ্যের যে সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্র সমস্যাসঙ্কুল, মূলত সেই কেন্দ্রগুলিতেই থাকবে বিশেষ পাহারার ব্যবস্থা। মোট ২০৬টি পরীক্ষা কেন্দ্রকে ইতিমধ্যেই সমস্যাসঙ্কুল বলে চিহ্নিত করেছে সংসদ। এর মধ্যে মালদহে এমন পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা সর্বোচ্চ। মোট ৫২টি এমন পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে এই জেলায়। এ ছাড়াও অন্যান্য জেলায় আরও শিক্ষা কেন্দ্র থাকছে। সংসদ জানিয়েছে, এই ২০৬টি কেন্দ্রের মধ্যে বাছাই করা কেন্দ্রগুলিতে আরএফডি ব্যবহার করা হবে। তবে সেগুলি কোন কোন কেন্দ্র তা স্পষ্ট করে জানায়নি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদ জানিয়েছে, পরীক্ষা শেষ হবে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। তবে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের আগে কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্র ছেড়ে বেরোতে পারবে না। প্রসঙ্গত, এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮.৫২ লক্ষ যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার বেশি। উল্লেখযোগ্য ভাবে এ বছর ছাত্রীর সংখ্যা ছাত্রের তুলনায় বেশি।
মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মোবাইল বাহিত হয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনার নজির আছে। সমস্যার সমাধানে এর আগে নানা পদক্ষেপ করেছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। এমনকি, গন্ডগোল এড়াতে পরীক্ষার হল সংলগ্ন গোটা এলাকার নেটওয়ার্কও বন্ধ রাখা হয়েছে পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা। তবে এ বার পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোনের প্রবেশ রুখতে আরও আধুনিক পদক্ষেপ করল পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তারা জানিয়েছে, এই প্রথমবার ‘রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর’ বা আরএফডি ব্যবহার করতে চলেছে সংসদ। যা আদতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে অনুসরণ করেছে তারা।