দিনহাটায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু তৃণমূলের। লোকসভা নির্বাচনকে পাখির যোগ করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে নানা কর্মসূচি। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন দলের কর্মীদের প্রমাণ দেওয়ার দায়িত্ব হবে। ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে কোচবিহার আসন পুনরুদ্ধারে এবার সামনের সারিতে থেকে লড়াই করবে দিনহাটা ও সিতাই বিধানসভা কেন্দ্র। গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার কেন্দ্রে পরাজিত হয় তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারী। এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল নিশীথ প্রামানিক। বর্তমানে তিনি স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী ।
ওই নির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা আসনের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে ছয়টিতেই পরাজিত হয়েছিল তৃণমূল প্রার্থী। একমাত্র সিতাই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৩৭ হাজার ভোটে লিড পেয়েছিল তৃণমূল প্রার্থী পরেশ। আগামী ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে হারানো আসন পুনরুদ্ধারে বদ্ধপরিকর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন উল্লেখ করেন,দিনহাটা ও সিতাই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে যদি আমরা ভালো ফলাফল করতে পারি তাহলে এই কেন্দ্র পুনরুদ্ধার করা কোন কঠিন হবে না।
উদয়নের এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করলেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি সুকুমার রায় জানান, সারা জেলায় তৃণমূলের অবস্থা ভালো নয়। দিনহাটা ও সিতাইয়ের উপর নির্ভর করছে এই দুই এলাকায় জোর করে ভোট করানো যায়। উপ নির্বাচনে উদয়ন গুহ দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে জোর করে ভোট করতে হয়। বিরোধীদলকে রাস্তায় নামতে না দেওয়া, ভোট দিতে না দেওয়া। আর সেভাবেই ভাবছে লোকসভাতেও করে দেব। লোকসভা তে সেভাবে হবে না। দিনহাটা ও সিতাইয়ে সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে বিজেপি। যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনেই বিজেপি ভালো ফল করবে। ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট আসবে দিনহাটা ও সিতাই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে।
দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলকে মানুষ আগামী নির্বাচনে উপরে ফেলে দেবে। চাকরি দেওয়ার নাম করে, ঘর দেওয়ার নাম করে এমনকি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে লক্ষ লক্ষ টাকা সাধারন মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। মানুষ সরে গিয়েছে তাদের কাছ থেকে। পায়ের তলের মাটি সরে যাওয়ায় উল্টোপাল্টা বলে কর্মীদের মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা করছে। উপ নির্বাচনে সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে না দিয়ে দিনহাটা কেন্দ্রে এক লক্ষ ৬৪ হাজার ভোটে জিতলেও এখনও আতঙ্কে রয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন – দিদির সুরক্ষা কবজ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান।
দিনহাটা সুভাষ ভবনে সাংবাদিকদের মন্ত্রী উদয়ন খোশ মেজাজে উল্লেখ করেন, গত বিধানসভার উপনির্বাচনে এক লক্ষ ৬৪ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল প্রার্থী। কবে ঘি দিয়ে ভাত খেয়েছি সেটার গন্ধ শুকব, সেটা আর শুকবো না। আমাদের কাছে এখন জিরো থেকে শুরু করে কতদূর এগিয়ে যাওয়া যায় সেটাই এখন লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্য। তার মাঝে পঞ্চায়েত নির্বাচন এসে গিয়েছে। এটা প্রত্যেকটা কর্মীর নিজস্ব পরীক্ষা।
সেই পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তারা তৈরি থাকবে।২০০৯ সালে এরকম একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলাম। সে সময় আমি যে দল করতাম সেই দলের কাছে একটা কোচবিহার লোকসভা আসন ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমরা টার্গেট রেখেছিলাম যদি আসনটা জিততে হয় তাহলে এই দুই কেন্দ্রের ভোট দিয়ে আমাদের আসনটা ধরে রাখতে হবে। সেদিন আমরা দেখেছিলাম দিনহাটাও সিতাই আসনটা ধরে রাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছিল। আমার দলবদল হয়েছে, সহকর্মীরা অনেক বদলেছে। এই অবস্থায় কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র পুনরুদ্ধার করতে দিনহাটা ও সিতাই বিধানসভা কেন্দ্র হবে অন্যতম হাতিয়ার।
পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে উদয়ন উল্লেখ করেন, আমাদের কর্মীরা যে জং পড়েনি, আত্ম সন্তুষ্টিতে ভুগছে না তাদের সেটা প্রমাণ দেওয়ার দায়িত্ব হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। যে আসলে হারবে সেই এলাকায় নেতাকর্মীদের কৈফিয়ৎ দিতে হবে কেন হারলাম।