বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও বড় ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর , ইংরেজরা দেশ ছেড়েছে ১৯৪৭ সালে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পার করার পরও দেশে এখনও জারি রয়েছে ইংরেজদের তৈরি আইন। এবার ইংরেজদের আনা এই আইন পরিবর্তনে বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারী আইনের পরিবর্তন আনতে সংসদে তিনটি বিল পেশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। প্রস্তাবিত তিন আইনে দেশের নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা করার কথাই বলা হয়েছে। এ দিন লোকসভায় অমিত শাহ জানান, গণপিটুনির অপরাধে সর্বোচ্চ সাজার বিধান আনা হবে। একইসঙ্গে আদালতে বিচার প্রক্রিয়াকে আরও নির্ঝঞ্চাট বানাতেও একাধিক নতুন আইন ও বিধান আনার কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আইনের ব্যাখ্যার পর বিচার ব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “দীর্ঘ সময় ধরেই দেশের বিচার প্রক্রিয়া মন্থর হয়ে গিয়েছে। ন্যায় বিচার পেতে এত দেরি হচ্ছে যে লোকজনের বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে বিশ্বাস উঠে গিয়েছে। আজ ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য কেউ আদালতে যেতে চান না। আমি নিজেও গুজরাটের আইনমন্ত্রী ছিলাম। তাই বাস্তবতা জানি। এই ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতেই বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার থেকে বিচার ব্যবস্থায় ল্যাপটপ, মেসেজ, জিপিএস ব্যবস্থাকে সংযুক্ত করা হচ্ছে। আদালতের সমস্ত প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন করা হবে। আগে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুধু হাজিরা হত। এবার শুনানি থেকে শুরু করে মামলাকারী-অভিযুক্তের বয়ান শোনা, পুরো প্রক্রিয়াটিই ডিজিটাল মাধ্যমে হবে। সাক্ষীদের রেকর্ডিও ডিজিটাল পদ্ধতিতে হবে।”
পুলিশি ব্যবস্থা নিয়েও তিনি বলেন, “পুলিশের উপরও মানুষের বিশ্বাস কমছে। অনেক সময়ই তল্লাশি, বাজেয়াপ্তের সময় নির্দোষ নাগরিকদের ফাঁসানো হয়। এবার থেকে ভিডিয়োগ্রাফি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। ভিডিয়োগ্রাফি ছাড়া চালান বৈধ বলে গণ্য করা হবে না। তল্লাশি অভিযানে ফরেন্সিক এক্সপার্টদের থাকা বাধ্যতামূলক হতে চলেছে। তৈরি হতে চলেছে মোবাইল ফরেন্সিক ল্যাবও।”
অভিযোগ দায়ের প্রক্রিয়াকেও সহজ করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এবার থেকে দেশের যেকোনও প্রান্ত থেকে এফআইআর দায়ের করা যাবে। চালু হতে চলেছে ই-এফআইআর।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, সরকারি কর্মীদের সুরক্ষার জন্য এবার থেকে সিভিল সার্ভেন্ট ও পুলিশের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে আলাদা করে অনুমতি নিতে হবে। গণপিটুনির ক্ষেত্রে ৭ বছর আজীবন কারাবাস এবং মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান তৈরি হচ্ছে।পাশাপাশি ছিনতাই এর ক্ষেত্রেও শাস্তির জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আসতে চলেছে।
আরও পড়ুন – এ বার রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড আম আদমি পার্টির সাংসদ রাঘব চাড্ডা
এ দিন লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইন্ডিয়ান পেনাল কোড (Indian Penal Code), ১৮৬০-র পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড (Code of Criminal Procedure), ১৮৫৮-র পরিবর্তে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট (Indian Evidence Act), ১৮৭২-র পরিবর্তে ভারতীয় সাক্ষ্য আইন আনা হবে।