অমর্ত্যকে সেনের বিরুদ্ধে ‘কঠোর পদক্ষেপ’-এর হুঁশিয়ারি, নোটিস জারি করল বিশ্বভারতী ,বিশ্বভারতীর শুনানিতে উপস্থিত না থাকার ফলে আগামী ১৯ তারিখ বেলা ১২টায় ১৯৭১ সালের দখলদার উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে ‘কড়া পদক্ষেপ’ করতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। এই মর্মে অমর্ত্য সেনের আইনজীবীকেও ইমেল মারফত নোটিস পাঠিয়ে দিয়েছেন বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার। অর্থাৎ, নোটিসে না লিখলেও তারা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন নোবেলজয়ীকে উচ্ছেদ করার বিষয়ে আরও এক ধাপ এগোলেন।
অমর্ত্য সেনকে চিঠি দিয়ে বিশ্বভারতী বলেছিল, তাঁর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের দখলদার উচ্ছেদ আইন কেন প্রয়োগ করা হবে না, তার জবাব ২৪ মার্চ বা তার আগে জানতে হবে। পাশাপাশি, ২৯ মার্চ বিকেলে অমর্ত্য সেনকে সশরীর অথবা তাঁর কোনও প্রতিনিধিকে বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচিব তথা এস্টেট অফিসারের কাছে শুনানির জন্য হাজিরা দিতেও বলা হয়েছিল। অমর্ত্য সেন বিদেশে থাকায় এবং জমি সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি না-থাকায় ওই তারিখে শুনানিতে থাকা সম্ভব হবে না বলে বিশ্বভারতীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন অমর্ত্যের আইনজীবী গোঁরাচাঁদ। চিঠি পাঠিয়ে ৪ মাস সময়ও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, বিশ্বভারতী ৪ মাসের বদলে মাত্র ১০ দিন সময় দিয়েছিল হাজিরার জন্য।
নোবেলজয়ীর অবর্তমানে ‘বিতর্কিত’ জমি সংলগ্ন এলাকায় যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয় সেই জন্য ১৪৫ ধারা চেয়ে প্রশাসনের কাছে বুধবার আবেদন জানিয়েছিলেন গোরাচাঁদ। শুনানিতে হাজির থাকতে অমর্ত্যকে বিশ্বভারতী যাতে অতিরিক্ত সময়ে দেয় সেই অনুরোধ জানিয়েও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন গোরাচাঁদ। তার পরেই বৃহস্পতিবারের এই নোটিস।
দীর্ঘ দিন ধরে চলা জমি বিতর্কে বিশ্বভারতী বারবার দাবি করেছে অমর্ত্য সেনের লিজ নেওয়া জমির পরিমাণ ১.৩৮ একর নয়, আসলে ১.২৫ একর। অর্থাৎ তিনি ১৩ শতক জমি জবরদখল করে রেখেছেন, যা বিশ্বভারতীর সম্পত্তি। এই মর্মে অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনে আসার পর থেকে আইনি নোটিস পাঠিয়ে জমি হস্তান্তরের দাবি করেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই জমি তিনি নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছেন। এই মুহূর্তে অমর্ত্য সেন বিদেশে থাকলেও জমি পুনরুদ্ধারে মরিয়া কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন – ফের ‘টক টু মেয়র’ বাতিল করে দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রারের তরফ থেকে একটি নোটিস জারি করা হয়েছে। যে নোটিস পাঠানো হয়েছে অমর্ত্য সেনের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তীকে। ওই নোটিসে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছন, ১৯৭১ সালের দখলদার উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী এ বার আগামী ১৯ এপ্রিল কঠোর সিদ্ধান্ত (অর্থাৎ উচ্ছেদ) নিতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ গত মাসের ২৯ তারিখ অমর্ত্য সেনকে শুনানির জন্য ডাকা হয়েছিল। তিনি উকিল মারফত সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু আইন অনুযায়ী ৭ দিনের বেশি সময় দেওয়া যায় না। তাও তাঁরা যতটা সম্ভব সময় দিয়েছেন। তাই আগামী ১৯ এপ্রিল কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ঠিক করেছেন। পাশাপাশি তারা এও বলেছেন, আগামী ১৯ তারিখ অমর্ত্য সেনের আইনজীবীও উপস্থিত থাকতে পারবেন বা ইমেল মারফত কোনও কিছু জানানোর থাকলে জানাতে পারবেন।