‘পিসরুমে’ যুদ্ধকালীন তৎপরতা চলছে, ভূরি ভূরি অভিযোগ আছড়ে পড়ছে রাজভবনে,কি বলছেন রাজ্যপাল ?পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হিংসা-অশান্তির অভিযোগ শুনতে রাজভবনে দিনরাত, খোলা পিস রুম (Peace Room)। দিন রাত কাজ করছে পিস রুমের কন্ট্রোল বিভাগ। আর লাগাতর ফোনও যাচ্ছে সেখানে। সূত্রের খবর, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে তাঁরা শাসকের চাপের মুখে পড়ছেন। বেশিরভাগ অভিযোগই আবার বিরোধী বিজেপির। প্রসঙ্গত, ভাঙড়ে মনোনয়ন ঘিরে অশান্তি, হিংসা, গুলিচালনার ঘটনার পরই এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি সরেজমিনে বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর গত বৃহস্পতিবারই রাজভবনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, হিংসার অভিযোগ শোনার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। পিস রুমে অভিযোগ জমা পড়ছে গুচ্ছ গুচ্ছ। সেক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে কোন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হচ্ছে, সেটাও দেখার।
রাজভবনের কর্মী জানান, ফোন সর্বক্ষণ খোলা। তারপর এই মেইল আইডি সক্রিয়। সেখানে মেইল করেও অভিযোগ জানানো যাবে। প্রচুর মেইল আসছে। অভিযোগ নোট করে পাঠানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ভাঙড়, ক্যানিং, মুর্শিদাবাদ থেকে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানান তিনি। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের তরফ থেকে অভিযোগ জমা পড়ছে।
সোমবার ভোর রাতেই মালদহের ইংরেজবাজারে বাঁশ দিয়ে পেটাতে পেটাতে বিজেপি প্রার্থীর ভাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ। পরিবারের সদস্যদেরও মারধরের অভিযোগ। মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র বলেন, “রাজ্যে তো আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। এতগুলো গ্রামের লোক আজকে সকাল থেকে পুলিশকে ফোন করছে। পুলিশের কোনও জবাব নেই। আমি নিজে ডিএম-কে ফোন করছি, ডিএমের জবাব নেই। মেসেজ করলেও কোনও জবাব মিলছে না। এই তো অবস্থা। আমাকে বাধ্য হয়ে রাজভবনে জানাতে হল। রাজ্যপালকেও ভোর সাড়ে পাঁচটায় জানিয়েছি। লিখিতও দেওয়া হয়েছে। নিশ্চয়ই সেখান থেকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও এখনও পর্যন্ত কোনও পুলিশ পৌঁছল না।”
পিস রুম থেকে সরাসরি খবর সম্প্রচারিত হতে হতেই দেখা যায় সেখানে রাজ্যপাল প্রবেশ করেন। কর্তব্যরত ওএসডি-র সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর বলে জানান রাজ্যপাল (Governor C V Ananda Bose)। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, এটা কোনও কন্ট্রোল রুম নয়, এটা পিস রুম। এখানে অভিযোগ শুনে ‘ইন্সস্ট্যান্ট রেমিডি’ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বহু কেসে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন – শওকতকে জেড ক্যাটিগরির নিরাপত্তা দিল রাজ্য, নওশাদ গেলেন আদালতে
কী বলছেন রাজ্যপাল? রাজ্যপাল বলেন, ” রাজ্যপালের মূল দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে রক্ষা করা। আমি সেই কাজটাই করছি। আমি শাসক এবং শাসিতের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছি। আমরা সকলে একসঙ্গে কাজ করছি। একজন আরেকজনের এলাকায় ঢুকে পড়ছে না।” তিনি আরও জানান, এখন নির্বাচনের সময় অনেক রকম সমস্যা তৈরি হতে পারে। একজন কাউকে থাকতে হবে, যিনি এই সব মানুষদের সমস্যার কথা ধৈর্য ধরে শুনবেন। রাজ্যপালের কথায়, “আমি কোন ভ্যালু জাজমেন্ট করতে আসিনি। মৃত্যু নিয়ে যে অভিযোগ এসেছে, সেই অভিযোগের তদন্ত করবে তদন্তকারী সংস্থা।”