ডেঙ্গি মোকাবিলায় তৎপর নবান্ন, ছুটি বাতিল সমস্ত কর্মীদের

পুজোর আগে ডেঙ্গি পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ জরুরি ভিত্তিতে নবান্নে বৈঠক

ক্রমশই খারাপ হয়ে উঠেছে রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি (Dengue management)। কলকাতার পাশাপাশি জেলার চিত্রটাও একই। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে লাফ দিয়ে। বাড়ছে মৃত্যুও। ইতিমধ্যেই সাতটি জেলাকে ডেঙ্গির হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। পুজোর আগেই ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব সহ অন্যান্য আধিকারিক এবং জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এই বৈঠকে ডেঙ্গি মোকাবিলার বেশ কিছু নতুন রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গি মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে (leave cancelled)।

আরও পড়ুন: পুজোর পরেই কী উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ শুরু? কী বলছে কমিশন?

নবান্ন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, কলকাতা সহ জেলাগুলিতে প্রতিটি পুরসভার যেসব ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সেইসব ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করবেন জেলাশাসকরা। কমিশনার অফ পুলিশ এবং পুলিশ সুপারদের জমা জল বের করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত থেকে নিবিড় পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে ডেঙ্গি নির্মূল করার জন্য। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

 

গ্রামাঞ্চলের পঞ্চায়েতগুলি ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মাইক্রো প্ল্যান তৈরি করবে। রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা হবে তার জন্য এসওপি তৈরি করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে সঠিক ও যথাযথ ডেটা এন্ট্রি করতে হবে। স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে ডেঙ্গি নিয়ে হসপিটালগুলোর সঙ্গে বৈঠক করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। আজ সোমবারই সেই বৈঠকে হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

 

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যজুড়েই বাড়ছে হটস্পট (dengue hotspot)। সব থেকে বেশি হটস্পট উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ সহ বেশ কিছু জেলায়। সব থেকে খারাপ অবস্থা দমদম, বিধান নগর পুর এলাকা। তার সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছে কামারহাটি। এই হটস্পট এলাকাগুলোতে এটি দ্রুত নোংরা পরিষ্কারের কাজ শুরু করতে হবে (Dengue management)। স্ক্র্যাপ মেটিরিয়াল পরিষ্কার করা, নির্মাণস্থলগুলি পরিষ্কার রাখা, বন্ধ কারখানা চত্বর এবং পরিত্যক্ত জায়গায় যাতে জল না জমে তা নজর রাখার উপর বিশেষ জোর দিতে বলা হয়েছে।

 

রেল এবং মেট্রোর আওতাধীন এলাকা পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। শহর-গ্রাম নির্বিশেষে বাজার এবং হাসপাতাল চত্বর নিয়মিত পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকী, জমি বা বাড়ির মালিকরা যদি ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য নির্দেশিকা না মেনে চলেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

 

এছাড়া জেলায় জেলায় বিশেষ পর্যবেক্ষক দল তৈরি করা হবে। তাঁরা নিয়মিত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করবেন। সমস্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সরকারি ডেঙ্গি-বিধি মেনে চলার নিদেশ দেওয়া হয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত করতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যে প্রচার করা হবে। হটস্পট এবং বস্তি এলাকাগুলিতে মশারি বিলি করা হবে।

 

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে ২৪*৭ ফিভার ক্লিনিক এবং ডেঙ্গি টেস্টিং পরিষেবা চালু থাকবে। এছাড়া রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গি মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে (leave cancelled)।

en.wikipedia.org