সিকিমে আটকে থাকা বাঙালি পর্যটকদের রাজ্যে ফেরাতে তৎপর নবান্ন

পুজোর আগে ডেঙ্গি পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ জরুরি ভিত্তিতে নবান্নে বৈঠক

বুধবার সকালে মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টির জেরে তিস্তার জল নেমে এসেছে সমতলে। যার ফলে গোটা সিকিম এখন প্রায় জলের তলায়। আর হঠাৎ আসা এই ভয়াবহ বিপর্যয়ে সিকিমে আটকে পড়েছে বহু পর্যটক। তাদের মধ্যে রয়েছে বহু বাঙালি পর্যটকও। আর এবার তাদের রাজ্যে ফেরাতে তৎপর নবান্ন। নবান্নের খবর অনুযায়ী, ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে এই মুহূর্তে প্রায় ২ হাজার বাঙালি পর্যটক সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছে। তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনাটাই এখন সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের সামনে। কারণ, রাস্তায়, রাস্তায় ধসের কারণে সিকিমের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই আপাতত সকলকে সিকিমের কোনও নিরাপদ জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সিজিও কমপ্লেক্সে অভিযান সিপিএমের

সিকিমে আটকে পড়া বাঙালি পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য সিকিম সরকারকে নবান্নের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে। নবান্নের কর্তারা আশ্বস্ত করছেন, দুর্যোগ কেটে গেলেই আটকে থাকা পর্যটকদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় ফিরিয়ে আনা হবে। বিষয়টি নিয়ে বুধবার সিকিমের মুখ্যসচিবের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।

 

সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর পেয়েই বুধবার দুপুরে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ভার্চুয়াল বৈঠকে সিকিমে আটকে থাকা এরাজ্যের পর্যটকদের উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সিকিমে আটকে পড়া পর্যটকদের পরিবার পরিজনরা এই মুহূর্তে খুবই উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। মোবাইল টাওয়ার বসে যাওয়ায় সিকিমে আটকে থাকা পর্যটকদের অনেকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

 

তার ফলে চিন্তায় পড়েছেন আত্মীয়পরিজনরা। সেজন্য সিকিম সরকারের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। পরিজনদের খবরাখবর দিতে পর্যটন দফতর থেকে বিবাদী বাগ টুরিজম সেন্টারে আলাদা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যার ফোন নম্বর হলো ১৮০০-২১২-১৬৫৫ এবং ৯০৫১৮৮৮১৭১। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সিকিমে আটকে পড়া পর্যটকদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে অনেক হোটেল মালিক।

 

বাঙালি পর্যটকদের জন্য বিনা পয়সায় থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় হোটেলের ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। কয়েকটি পর্যটন সংস্থা আবার ঘুরপথে সিকিমে আটকে থাকা পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল আবার পর্যটকদের হেলিকপ্টারে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সিকিম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় গাড়িতে পর্যটকদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। সবথেকে ভাল হয়, সরকার যদি হেলিকপ্টারে করে তাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করে।’ অ্যাসোসিয়েশন অব কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের সভাপতি রাজ বসু বলেন, এই মুহূর্তে পর্যটকেরা কে কোথায় রয়েছে, তার কোনও সঠিক হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। ট্রেন, বিমানের টিকিটের দুর্ভাবনা ছেড়ে পর্যটকরা যেন নিজের জায়গাতেই থাকে।’

en.wikipedia.org