কি কারণে এই অস্বস্তিকর গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ? জানালেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী, একে তো প্যাচপ্যাচে গরম। তার উপর জায়গায় জায়গায় লোডশেডিং (Load shedding) । নাজেহাল অবস্থা হয়ে গিয়েছে রাজ্যবাসীর। সেই নিয়ে গতকালই রাজ্য সরকারকে একহাত নিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি বেড়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। আর এসবের মধ্যেই এবার সাংবাদিক বৈঠক করে গোটা বিষয়ের ব্যাখ্যা দিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Arup Biswas)। সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই গতকাল মেদিনীপুরের ডেবরায় একটি পোল ভেঙে পড়ে যাওয়ার ছবি দেখান মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘প্রতিদিনই কালবৈশাখীর ঝড়ে তার ছিঁড়ে যাচ্ছে। পোল ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। সেই কারণেই পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে।’
অসম ও উত্তর প্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বিদ্যুতের মাশুলের সঙ্গে বাংলায় বিদ্যুতের মাশুলেরও তুলনা টানেন তিনি। বাংলায় যে অনেক কম খরচে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হয়, তা বোঝাতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অসমে বিজেপি সরকারের বিদ্যুতের জন্য ইউনিট পিছু দিতে হয় ৮ টাকা ১৪ পয়সা। উত্তর প্রদেশে বিদ্যুতের জন্য ইউনিট পিছু দিতে হয় ৭ টাকা ৫৪ পয়সা। পশ্চিমবঙ্গে সেখানে ৭ টাকা ১২ পয়সা।’ মন্ত্রীর দাবি, ‘সারা ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে বাংলা। সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে বাংলায়।’ এই নিয়ে কেন্দ্রের স্বীকৃতির কথাও তুলে ধরেন তিনি।
তাহলে কেন বার বার এই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে রাজ্যবাসীকে? কেন বার বার বিদ্যুৎ বিভ্রাট? যদিও মন্ত্রী জানাচ্ছেন, ‘আমাদের কাছে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ আছে। কোথাও কোথাও যান্ত্রিক গোলযোগ, কোথাও কোথাও প্রকৃতির কাছে হেরে যাওয়ার কারণে, কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। আমরা যত দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব, তা দূর করার চেষ্টা করছি। একটা এসি কেন,১০ টা এসি লাগান, কোনও অসুবিধা নেই। আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই। শুধু লোডটা একটি বাড়িয়ে নিন।’
আরও পড়ুন – বসতে পারছেন না চায়ের দোকানে, বারবার শুনতে হচ্ছে চোর চোর স্লোগান, একঝাঁক…
বাম আমলের সঙ্গে তৃণমূলের আমলের পরিসংখ্যানগত তথ্যের তুলনাও টেনে আনেন তিনি। বললেন, ‘বাম আমলে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ। আজ গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৩৩ লাখ। বাম আমলে সর্বোচ্চ প্রয়োজন ছিল ৪০৮৫ মেগাওয়াট। আর আজ সর্বোচ্চ প্রয়োজন ৯২০০ মেগাওয়াট। আমাদের সরকার আসার পর সাগরদিঘিতে দুটি ইউনিট বাড়িয়েছে। ডিপিএলে একটি ইউনিট বাড়িয়েছি। সাগরদিঘিতে ৬৬০ মেগা ইউনিট এর কাজ চলছে।’ মন্ত্রী জানালেন, ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ পরিষেবায় উন্নয়নের জন্য ২৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে।