জেলে অনুব্রত-সুকন্যা, বোলপুরের পেল্লাই বাড়িতে থাকছেন কে? গোরু পাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল এবং সুকন্যা মণ্ডল। আপাতত তাঁরা রয়েছেন তিহাড় জেলে। সংশোধনাগারে মেয়ের সঙ্গে দ্বিতীয়বার দেখা হওয়ার সময় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি অনুব্রত। “সব ঠিক হয়ে যাবে…”, এই আশ্বাস দিয়েও কান্নায় ভেঙে পড়েন কেষ্ট। একদিকে যখন বাবা এবং মেয়ে আইনি লড়াই লড়ছেন সেই সময় কার্যত খাঁ খাঁ করছে তাঁদের বীরভূমের নীচুপট্টির বাড়ি। কেষ্ট আবাসে একসময় লোক গমগম করত। দিনভর গাড়ি, বাইক, সাইকেল সার দিয়ে দাঁড় করানো থাকত দোতলা বাড়ির সামনে। কিন্তু, এখন বাড়িটিতে জনমানুষ নেই। এলাকাও কার্যত শুনশান। বাইরে থেকে কেউ এলে তিনি অনুব্রতর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তা দেখেন, কেউ কেউ আবার সেলফিও তোলেন।
জানা গিয়েছে, মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাতে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি অনুব্রত। তিনি বারবার মেয়েকে বলেন, “দিল্লিতে আসা তোর উচিত হয়নি।” সূত্রের খবর, বাবার এই মন্তব্যে সুকন্যার মন্তব্য ছিল, তিনি বারবার নোটিশ পাচ্ছিলেন। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েছিলেন তিনি দিল্লি আসতে।
একইসঙ্গে অনুব্রত মেয়েকে আশ্বাস দিয়েছেন, সমস্তকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আর এই কথা বলতে গিয়ে বারিধারা দেখা যায় তাঁর দুই চোখে। প্রসঙ্গত, মেয়ের গ্রফতারির পর উদাস গলায় এক ED আধিকারিককে কেষ্ট বলেছিলেন, “তোমাদের বিবেক নেই গো। মেয়েটাকে গ্রেফতার করলে!”
পাশাপাশি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রার্থনা ছিল, “ঠাকুর মেয়েটার যেন জামিন হয়ে যায়।” দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করেছেন অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডল। আপাতত তিনি আদালতের নির্দেশে রয়েছেন তিহাড় জেলেই।
সূত্রের খবর, শুধুমাত্র নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মী ছাড়া এখন আর এই বাড়িতে কেউ থাকেন না। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির এলাকাতেই থাকেন তাঁর ভাই সুব্রত। কিন্তু, সুকন্যা গ্রেফতার হওয়ার পর বদলে গিয়েছিল তাঁদের পারিবারিক সম্পর্কের সমীকরণ, এমনটাই দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশীর। তিনি আরও জানিয়েছেন, সুব্রত স্পষ্টই দাবি করেছেন দাদা এবং ভাইঝির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই।
আরও পড়ুন – বেঘোরে প্রাণ গেল প্রবাসী ভারতীয়,উগান্ডায় গুলিতে ঝাঁঝরা প্রবাসী ভারতীয়
মোটের উপর অনুব্রত মণ্ডলের দোতলা বাড়িতে এখন কেউ নেই। সুকন্যার গ্রেফতারির আগে মাঝে মধ্যে সেই বাড়িতে থাকতেন তাঁর বান্ধবী সুতপা পাল। কিন্তু, এখন সেই বাড়িতে দেখা পাওয়া যায় না সুতপার। জানা গিয়েছে, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ।