বছরের পর বছর মধু রেখে দিলেও নষ্ট হয় না, কেন জানেন? মাসের পর মাস কেটে গেলেও মধু টাটকা থাকে। ৫ বছর আগে কেনা মধু আপনি বছরের বেশ যে কোনও সময় খেতে পারেন। তখনও মধু সতেজ থাকবে। মাছ-মাংস থেকে শুরু করে শাকসবজি, সব খাবারের জিনিসেই নির্দিষ্ট সময়ের পর পচন ধরে। এমনকী চাল, ডালেও পোকা হয়। খাবারের প্যাকেটের পিছনেও উল্লেখ থাকে এক্সপেয়ারি ডেট উল্লেখ থাকে। নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হয়ে গেলে আর সেই খাবার আর খাওয়া যায় না। তাছাড়া দীর্ঘদিন খাদ্যপণ্য রেখে দিলে তাতে ছত্রাক জন্মে যায়। ওই খাবার খেলে শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু বছরের পর বছর মধু রেখে দিলে তা নষ্ট হয় না। খেয়াল করে দেখবেন, মধু কখনওই নষ্ট হয় না। কেন এমন হয় জানেন?
মধুতে সুক্রোজের পরিমাণ বেশি থাকে। এতে জলের পরিমাণ থাকে নামমাত্র। এই কারণেই মধুকে হাইগ্রোস্কোকিপ বলা হয়। এই একই কারণে মধু শুকিয়ে যায় না। বাইরের কোনও জীবাণু সহজে মধুর সংস্পর্শে আসে না এবং সংক্রমণ ছড়ায় না। ফলে, মধুতে কোনও জীবাণু সংক্রমণ হয় না। এই কারণে মধু সহজে নষ্ট হয় না। তাছাড়া মধু খেতে মিষ্টি হলেও এটি অ্যাসিডিক প্রকৃতির হয়। মধুর মধ্যে বেশ ভাল পরিমাণে গ্লুকোনিক অ্যাসিড থাকে। এই অ্যাসিড মধুর মধ্যে ব্যাকটেরিয়াকে বৃদ্ধি হতে দেয় না। যদিও এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে মৌমাছিরা। নেকটার তৈরি করার সময় গ্লুকোনিক অ্যাসিডের ক্ষরণ বেড়ে যায়। মৌমাছি নেকটারে গ্লুকোজ অক্সাইড নামের এক বিশেষ ধরনের এনজাইমের ক্ষরণ করে। এই কারণে মধুতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড তৈরি হয়। এই উপাদানটাই মধুর মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে কাজ করে।
তাজা মধু পাওয়া সহজ কাজ নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্যাকেজজাত মধু কিনে কাজ চালাতে হয়। সেখানে শিশির গায়ে উল্লেখ থাকে ব্যবহারের নির্দিষ্ট তারিখ। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে, কেন মধুর শিশির গায়ে ‘বেস্ট বিফোর’ লেখা থাকে। বাজারজাত প্রত্যেকটি প্যাকেটজাত জিনিসের গায়ে ‘বেস্ট বিফোর’ তারিখ উল্লেখ থাকা বাধ্যতামূলক। জাতীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধ্যতামূলক নিয়ম। তবে, দীর্ঘদিন মধু রাখলেও সেটা খারাপ হয় না।
আরও পড়ুন – কলকাতার হাসপাতালে শিশুরোগের সাধারণ ওয়ার্ডে জায়গা নেই। নতুন আতঙ্কের নাম অ্যাডিনোভাইরাস
মাসের পর মাস কেটে গেলেও মধু টাটকা থাকে। ৫ বছর আগে কেনা মধু আপনি বছরের বেশ যে কোনও সময় খেতে পারেন। তখনও মধু সতেজ থাকবে। আর এর পুষ্টিগুণও নষ্ট হয় না। মধুর মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা সকালবেলা খালি পেটে গরম জলে মধু মিশিয়ে পান করুন। এতে শরীরে জমে থাকা সমস্ত দূষিত পদার্থ দূর হয়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে।