লোকসভার পর এবার রাজ্যসভাতেও পাশ হল মহিলা সংরক্ষণ বিল। বুধবারই লোকসভায় পাস হয়ে গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রস্তাবিত মহিলা সংরক্ষণ বিল। বৃহস্পতিবার রাত ৯.৪৫ নাগাদ রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস হয়ে গেল। বিলের পক্ষে সংসদের উচ্চ কক্ষে ২১৫টি ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে। বিপক্ষে ১টিও ভোট পড়েনি!
আরও পড়ুনঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আপাতত স্বস্তি অভিষেকের, রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাইকোর্টে
তিন দশকের অপেক্ষার পর বুধবার লোকসভায় (Loksabha) পাশ হয়ে গিয়েছিল মহিলা সংরক্ষণ বিল (women reservation bill)। যার অর্থ লোকসভায় এবার ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে মহিলাদের জন্য। যেহেতু এটি সংবিধান বিল, তাই সভার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। এদিন ভোটাভুটিতে বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ৪৫৪ জন। বিপক্ষে ভোট দেন মাত্র ২ জন। তারপর বৃহস্পতিবার রাজ্যসভাতেও ধ্বনিভোটে পাস হয়ে গেল মহিলা সংরক্ষণ বিল। ২৪৫ জন সাংসদের মধ্যে বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ২১৫টি। বিপক্ষে একজনও ভোট দেননি। এবার রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলেই আইনে পরিণত হবে এই বিল (women reservation bill passed in rajya sabha)।
বুধবার লোকসভায় বিলটির পক্ষে বিরোধী জোটের সমর্থন পাওয়ার পর সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার রাজ্য সভায় বিলটি বিনা কাঁটায় পাস হয়ে যাওয়ার পরও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যসভা থেকে এই দিন সংসদের দুই কক্ষেই পাস হয়ে যাওয়ার জন্য সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে ভারতের নারী শক্তি বিশেষ সম্মান পেলেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
এই ঘটনা ঐতিহাসিক বৈকি। এর আগে একাধিকবার সংসদের দুই কক্ষে বিলটি পাস করানোর চেষ্টা হলেও কোনওবারই সাফল্য আসেনি। ১৯৯৬ সালে লোকসভায় প্রথমবার মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ করেছিল এইচ ডি দেবগৌড়া সরকার। সেই থেকে প্রায় ২৭ বছর অতিক্রান্ত। দেবগৌড়া, ইন্দ্রকুমার গুজরাল, অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং মনমোহন সিং জমানায় এই বিল লোকসভায় পেশ ও পাশের বার বার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু অতীতে কোনও সরকারই সফল হয়নি। মনমোহন সিং সরকার ২০১০ সালের ৯ মার্চ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করাতে সফল হয়েছিলেন। কিন্তু লোকসভায় বিলের পক্ষে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন জোগাড় করতে পারেনি। যা সম্ভব হল এবার। ২০১৪ সাল কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে তাতে ৯ বছর আগেই এই বিল পাশ করানো যেত। এ নিয়ে সমালোচনা করেও এই বিলকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস। সমর্থন জানিয়েছে তৃণমূলও। (women reservation bill)
তবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কথায়, এই বিল হল লোক ঠকানো। এখনই দেশে মহিলা সংরক্ষণ বাস্তবায়িত হবে না। আগে সরকার জনগণনা করবে। কবে সেই জনগণনা হবে তার কোনও ঠিক নেই। তারপর সরকার সেই জনগণনার ভিত্তিতে লোকসভার আসনের ডিলিমিটেশন করবে। তা কবে হবে তাও অনিশ্চিত। তারপর এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু হবে। সুতরাং সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য যে শুধুই রাজনৈতিক প্রচারের ফায়দা নেওয়া, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।