চিতা এবার শিকার করতে শুরু করেছে। সেপ্টেম্বর ১৭,২০২২ চিতা আনা হয়েছিল কুনা ন্যাশনাল ময়দানে। তিন মাসেই চিতারা বেশ মানিয়ে নিয়েছে ভারতের পরিবেশে। শিকার শুরু করেছে মানেই ধরা যেতে পারে চিতা স্বাভাবিক আচরণ করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিনে বিদেশ থেকে বিরল প্রজাতির চিতা এনে ছাড়া হয়েছিল এই জাতীয় উদ্যানে। এতদিন তাদের সম্পূর্ণ বনকর্মীদের দেওয়া খাদ্য নিতে দেখা আছে। এতদিন পর সেই চিতা নিজে শিকার করতে শুরু করেছে। কোয়েরেন্টাইন পর্ব শেষ হয়েছিল রবিবারই।
ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বড় এনক্লোজারে। আর তারপরেই স্বমেজাজে দেখা গেল মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানের দুই চিতাকে। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই প্রথম শিকারে থাবা বসাল নামিবিয়ার চিতারা। এমনটাই জানিয়েছে কুনো জাতীয় উদ্যানের কর্তৃপক্ষ। চিতা দু’টি একটি চিতল হরিণ শিকার করেছে বলে জানিয়েছেন কুনো জাতীয় উদ্যানের ডিভিশনার ফরেস্ট অফিসার (DFO) প্রকাশ কুমার ভার্মা। রবিবার রাতে বা সোমবার ভোরের দিকে হরিণটি শিকার করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের এই জাতীয় উদ্যানে মোট আটটি চিতা ছাড়া হয়েছিল।
তারপর, তাদের এই প্রথম শিকার।প্রসঙ্গত, নামিবিয়া উদ্যান চিতাগুলি নিয়ে আসার পর কুনো জাতীয় উদ্যান ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এতদিন কোয়েরেন্টাইন পর ৫ নভেম্বর ২টি চিতাকে বড় এনক্লোজারে ছাড়া হয়। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো পোষ্ট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর পোষ্ট করা ভিডিয়োটিতে, চিতা দু’টিকে ছুটে বেড়াতে দেখা যায়। বাকিদের পরে বড় এনক্লোজারে ছাড়া হবে বলে জানা গিয়েছে। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে ভিডিয়োটি পোস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী। ভিডিয়োটিতে কখনও খোসমেজাজে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে, আবার কখনও বা দৌঁড়ঝাপ করতে দেখা গিয়েছিল চিতা দু’টিকে ।
আরও পড়ুন – কয়লা পাচার ও বেআইনিভাবে মজুতের অভিযোগে বীরভূমে গ্রেফতার ৬
নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে চিতাগুলিকে নিয়ে উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেন মোদী। নামিবিয়ার থেকে আনা চিতাগুলি ভারতের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ভারতে আনা সবকটি চিতাই সুস্থ আছেবিদেশ থেকে আসাচিতাগুলি যাতে ভারতের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে মধ্যপ্রদেশের কুনোর জঙ্গলে।
চোরাশিকারিরা যাতে কোনওভাবেই কুনোর জঙ্গলের চারপাশে না ঘেঁষতে পারে, তার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে সুপার স্নিফার স্কোয়াড। প্রশিক্ষিত ছ’টি জার্মান শেফার্ড কুকুরের এই স্কোয়াড বনকর্মীদের সঙ্গে মিলে রক্ষা করছে চিতাদের। এর জন্য আইটিবিপি জওয়ানরা বিশেষ প্রশিক্ষণও দিয়েছে ওই জার্মান শেফার্ডগুলিকে। নামিবিয়া থেকে আসা চিতার মধ্যে রয়েছে ৫টি মহিলা এবং ৩টি পুরুষ চিতা।
১৯৫০ সালের পর প্রথম দেশের কোনও অরণ্যে ছাড়া হয় চিতাগুলিকে। ১৯৫২ সালে ভারতে চিতাকে বিলুপ্ত প্রাণী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আগামী পাঁচ বছর ধরে ধাপে ধাপে আরও ৫০টি চিতা ভারতে আনা হবে। বলে স্বস্তির খবর দেন মোদী। অথচ একটা সময় ভারতে চিতা পাওয়া যেত। কিন্তু লেপার্ড পাওয়া যেত। এখন দেখার চিতা ভারতে প্রজনন শুরু করে কিনা। এই জলবায়ু ওদের স্বাভাবিক জীবনধারণের অনুকূল কিনা সেটি দেখার।