তদন্তের ভয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে নথিপত্র পাচারের অভিযোগ শাসকদলের প্রধানের বিরুদ্ধে। মালদহের তৃণমূল পরিচালিত এক গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দপ্তর থেকে নথিপত্র পাচারের অভিযোগ। জানা গিয়েছে,ভ্যানে করে নথিপত্র পাচারের সময় স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পেয়ে ভ্যান আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে জোর বচসা তৈরি হয় এবং সেখানে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে তৃণমূল পরিচালিত মালতীপুর বিধানসভা তথা চাঁচল ২ ব্লকের ভাকরি পঞ্চায়েত দপ্তরে। এদিকে, খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা দুর্ব্যবহারের শিকার হন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যদের দ্বারা। এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। যদিও নথি পাচারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সুমিত দাস।
ওই পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তথা মালতীপুর বিধানসভার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক আলবেরুনী কটাক্ষ করে জানান, তদন্তের ভয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে পঞ্চায়েতের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র লোপাট করছিল পঞ্চায়েত প্রধান। দুর্নীতিতে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই পঞ্চায়েত।কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা রাজ্যজুড়ে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে। একশো দিনের কাজে দুর্নীতি ও আবাস যোজনায় স্বজনপোষণ যদি ভুরি ভুরি অভিযোগ এই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। তদন্ত হলে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আঁচ করেই আগাম পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচার করছিল প্রধান। বিষয়টির প্রশাসনিক স্তরে তদন্ত হওয়া উচিত।
বলে জানান তিনি। বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য সুভাষ কৃষ্ণ গোস্বামী কটাক্ষ করে বলেন, ‘দুর্নীতিতে জর্জরিত হয়ে পড়েছে এরা। নিজেদের বাঁচাতে প্রধান তদন্তের ভয়ে নথি সরাতে ব্যস্ত। মানুষ তা মেনে নেবে না। ভাকরিতে সাধারণ মানুষের কাছে ধরা পড়েছে তৃণমূলের প্রধান। গত চারবছরে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলি একশো দিনের প্রকল্পে ডাকাতি করেছে। হর্টিকালচারে কলাগাছ না লাগানো থেকে শুরু করে পুকুর খনন না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছে।’
আরও পড়ুন – ধূপগুড়িতে ইংরেজি নববর্ষকে স্বাগত জানাতে চলছে প্রস্তুতি
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে পঞ্চায়েত দপ্তরের সামনে একটি ভ্যানে পঞ্চায়েত কর্মীর উপস্থিতিতে তোলা হচ্ছিল বস্তা ভর্তি নথিপত্র ও ফাইল। সেই বস্তায় দেখা যায়, জবকার্ড আবেদনকারীর নথি, আবাস যোজনা প্রকল্পের নথি ও একাধিক টেন্ডারের নথি। সেগুলি বস্তায় ভর্তি করে পাচার করা হচ্ছিল বলে বাসিন্দাদের অনুমান। সন্দেহ হতেই তৎক্ষনাৎ বাসিন্দাদের একাংশ ভ্যানটিকে আটকে রাখেন।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা এটিএম রফিকুল হোসেনের দাবি, পঞ্চায়েত স্বচ্ছভাবেই চলছে। কংগ্রেস ও বিজেপির কোনও অস্তিত্ব নেই চাঁচলে। তাই তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। কোন নথি বের করা হচ্ছিল তা পঞ্চায়েতে খোঁজ নেওয়া হবে। তবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের বিষয়টি নিন্দে করেছেন তিনি।
যদিও ভাকরি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুমিত দাস নথি পাচারের বিষয় অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন অফিস ঘর পরিষ্কার করার জন্য পুরনো কাগজপত্র সরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। অন্য কিছু নয়। চাঁচল ২-এর বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস জানিয়েছেন, ভাকরি পঞ্চায়েতের কাগজপত্র পাচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।