পাহাড়ে পালকি আ্যম্বুলেন্সের দৌলতে গর্ভবতী মায়েদের মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যতে। আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বক্সার দূর্গম পাহাড়ের ১৩ টি গ্রামে পালকি আ্যম্বুলেন্স চালু হয়েছে।সেজন্য গত দেড় বছরে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু সংখ্যা প্রায় শূন্যতে নেমে এসেছে।আগের থেকে বক্সার দূর্গম পাহাড়ের দেহে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে চুনাভাটি,আদমা,ওসলুম,লালবাংলো,তাসিগাঁও, বক্সা ফোর্ট,সহ একাধিক জনজাতি অধ্যুষিত গ্রাম।
এই দূর্গম পাহাড় থেকে জেলা হাসপাতালের দূরত্ব ৪০-৫০ কিলোমিটার।বক্সার পাদদেশ সান্তলা বাড়ি থেকে এই গ্রাম গুলির দুরত্ব ৫ থেকে নয় কিলোমিটার।পাহাড়ি এই পুরো পথ পাহাড়ের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে হাঁটা পথে চলতে হয় পাহাড়ি গ্রামের প্রায় পাচ হাজার মানুষকে। এত দিন এই গ্রাম গুলির গর্ভবতী মহিলা কিংবা মুমূর্ষু মানুষদের বাঁশের মাচায় করে দূর্গম পাহাড়ের পাকদণ্ডী পেরিয়ে নয় কিলোমিটার হাঁটা নিয়ে আসা হতো সান্তলা বাড়িতে।
তার পর সেখান থেকে গাড়িতে করে নিয়ে আসা হতো আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে।সেই বাঁশের মাচায় থাকতো না প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র,অক্সিজেন,কিংবা প্রসূতি মহিলাকে দেখভালের জন্য অভিজ্ঞ কোন মহিলা কর্মী।এছাড়াও শীত বর্ষায় খোলা আকাশের নিচে একদিকে যেমন ঠান্ডায় কষ্ট পেতে হয় অন্যদিকে বৃষ্টিতেও ভিজতে হতো প্রসূতি মায়েদের।
আরও পড়ুন – মহার্ঘ্যভাতা অবিলম্বে প্রদানের দাবি তুলে শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের দফতরে অভিযান
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হাসপাতালে নিয়ে যাবার আগেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তো গর্ভবতী মায়েরা।
তবে বছর দেড়েক আগে প্রশাসনের উদ্যোগে বক্সা পাহাড়ে পালকি আম্বুলেন্স চালু হওয়াতে প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু সংখ্যা শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছে।প্রশাসনের তৈরি করা এই পালকি আ্যম্বুলেন্স-এ একদিকে যেমন রয়েছে অক্সিজেনের সুবিধা রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধের যোগান, ওজনে হাল্কা এই পালকিটি তৈরি করা হয়েছে ফাইবার হাল্কা টিন দিয়ে।ফলে পালকিবাহকদের এটি বহন করতে কোন অসুবিধা পোহাতে হয় না।
অনায়াসেই গর্ভবতী মহিলা কিংবা মুমূর্ষু রোগীদের গন্তব্যেস্থলে নিয়ে যাওয়া যায়।পালকিতে টিনের ছাদ থাকায় শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায় কষ্ট পেতে হয় না।অন্যদিকে এই গর্ভবতী মহিলাদের সাথে পাহাড়ের পথে থাকে একজন প্রশিক্ষিত মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী।
আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা জানিয়েছেন ,পাহাড়ের মানুষের দীর্ঘ দিনের একটি বিরাট সমস্যার সমাধান করা গেছে।এতে করে গর্ভবতী মহিলাদের মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমে গেছে।গত দেড় বছরে একজনেরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
বক্সা পাহাড়ের মুখিয়া ইন্দ্র শংকর থাপা জানান আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি।গত দেড় বছরে একজনেরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।