বিশ্ব ডিম দিবসঃ ‘প্রতিদিন ডিম খান, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান’। ডিমকে বলা হয় গরীবের আমিষ। কেউ বলেন, ‘আমিষঘর’। গোলাকৃতি এই খাদ্যপণ্যের ভেতরের পুরোটাই আমিষ। সস্তায় প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে ডিমের জুড়ি নাই। বিশ্ব ডিম দিবস আজ। দিবসটি প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার উদযাপিত হয়।
১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আন্তর্জাতিক এগ কমিশনের কনফারেন্সে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলছে প্রতিবছরের এই উদযাপন। এর উদ্দেশ্য- ডিমের খাদ্যমান ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে মানুষকে জানানো এবং স্বাস্থ্যসম্মত ডিম উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ভোক্তার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ডিম রাখতে উৎসাহ দান। এই ডিমে প্রোটিনের পাওয়ার হাউস হলো ডিম। যার মধ্যে ১৩ টা আলাদা আলাদা ভিটামিন, খনিজ, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।
বেশিরভাগ লোকই ব্রেকফাস্টে ডিম খাওয়া পছন্দ করেন। গোটা পথিবীতে ৮ অক্টোবর দিনটিকে ওয়ার্ল্ডে হিসেবে পালন করা হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী ডিম খেলে খুব অল্প খাবারে পেট ভরে যায়। দীর্ঘক্ষন খিদে পায় না। এটি শরীরের ইমিউন সিস্টেম মজবুত করে। পাশাপাশি ব্লাড সুগারে ইনসুলিন স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রতিদিন একটা করে ডিম খাওয়ার দুর্দান্ত উপকারিতা রয়েছে।
নিউট্রিশন এর ঘাটতি পূরণ করে ডিম। একটা বড় ডিম প্রায় ৭৭ ক্যালোরি শক্তি যোগায়। যার মধ্যে ভিটামিন এ, বি৫, বি১২ ই, কে এবং ফসফরাস, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক এর মত খনিজ রয়েছে। পাশাপাশি হৃদয়কে স্বাস্থ্যকর রাখার জন্য ডিমে থাকে কোলিন। একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পোষক। বেশিরভাগ লোকের পুষ্টিগত যে ত্রুটি রয়েছে, তচা নিয়মিত ডিম খেলে মিটে যেতে পারে।সেল মেমব্রেন এবং মস্তিস্ককে বানানোর কাজ করে ডিম।
আর ও পড়ুন সব্যসাচী প্রসঙ্গে কি বললেন দিলীপ ঘোষ
একটা সিদ্ধ ডিম থেকে ৪১৭ মিলিগ্রাম কোলিন পাওয়া যায়। ডিম চোখের দৃষ্টি বাড়ায়। একটা ডিমে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। তাতে রাতকানা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। ডিমের ভরপুর ভিটামিন এ থাকে, যা চোখের অত্যন্ত সহায়ক।
প্রোটিনের সঠিক মাত্রা ডিমকে কার্যকরী করে তুলেছে। প্রোটিন শরীরের সমস্ত রকম স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে। একটি বড় ডিমে ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। যা ওজন কমাতে সহায়তা করে। মাংসপেশির দৃঢ়তা বাড়ায়, ব্লাড প্রেসার কম করে, হাড় মজবুত করে, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ভরপুর মাত্রায় থাকে। ডিমের প্রচুর কোলেস্টেরল থাকে কিন্তু ব্লাড কোলেস্টেরল ক্যারি প্রভাবিত করে না।
ডিম যারা নিয়মিত খান তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ লোক কোলেস্টেরল এর সমস্যায় ভোগেন না। বাকি ৩০ শতাংশের চেয়ে সামান্য সমস্যা দেখা দেয়। ডিম ওজন কমাতে সহায়ক। যদি আপনি ওজন কম করতে চান, তাহলে কম ক্যালোরি খেতে হবে।
আর ডিমের চেয়ে ভাল বিকল্প আর নেই। ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সাদা অংশটি খেলে আপনার কোলেস্টরেল টুকু ব্রাত্য থাকবে এবং যত রকম ভাল পুষ্টি, তার সমস্তই আপনার শরীর পাবে। অথচ খিদেও পাবে না। তাহলে দেরি না করে রোজকার খাদ্য তালিকায় ডিম রাখুন।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ডিমের গুরুত্ব বাড়াতে আজ পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব ডিম দিবস’। ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার প্রথম বিশ্ব ডিম দিবসের আয়োজন করা হয়। এর পর থেকেই প্রতিবছর এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
’ ১৯৬৪ সালে ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) গঠিত হয়। সংস্থাটি প্রাণিজ আমিষের চাহদিা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করে।