প্রথমে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ। তারপর? সংসদে মহুয়া মৈত্রের সদস্যপদ খারিজের প্রস্তাব আনবেন কেন্দ্রীয়। কবে? আগামিকাল, শুক্রবার। শুধু তাই নয়, আধঘণ্টার মধ্যেই সেই প্রস্তাব করাতে চায় সরকার!
সংসদের এখন শীতকালীন অধিবেশন চলছে। এদিন তৃণমূলের লোকসভা নেতা, সাংসদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্যায় জানান, ‘আমি যখন আজকে মাননীয় স্পিকারের সঙ্গে কথা বলতে গেলাম, উনি জানালেন যে মহুয়া মৈত্রের বিষয়টি কালকে আসবে। এথিক্স কমিটির রিপোর্টের সঙ্গে প্রস্তাব আসবে। আমি তখন বলি, মহুয়া মৈত্রকে বলতে দিতে হবে। আলোচনায় রাখতে হবে বিষয়টা। উনি বলেন, আমি কিছু সময় দেব। আমি বলি, কিছু সময়ে হবে না।ইন্ডিয়া জোটের প্রতিটি দলই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছে। তারা তো বলতে চাইবে। বললেন, আপনার বক্তব্য শুনে রাখলাম। আমি আধঘন্টার মধ্যে বিষয়টা নিষ্পত্তি করতে চাই’।
ঘটনাটি ঠিক কী? ‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’ বিতর্কে বিপাকে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ৫০০ পাতার রিপোর্টে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করেছে এথিক্স কমিটি। লোকসভার পোর্টালে প্রত্যেক সাংসদের আলাদা লগইন ও পাসওয়ার্ড থাকে। এথিক্স কমিটি রিপোর্টে উল্লেখ, ‘সেই লগইন ও পাসওয়ার্ড শেয়ার করেছিলেন মহুয়া। এরপরই দেশের বাইরে থেকে পোর্টালে লগইন করা হয়’। কমিটির মতে, ‘স্রেফ অনৈতিক নয়, এই কাজ সংসদের অবমাননা’। কমিটির আরও সুপারিশ, ‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’ বিতর্কে কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের’।
তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, ‘এটা পুরো আমাদের দিকে যাবে। মানুষ বিপুল পরিমাণে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করবে। ওরা যদি ভেবে থাকে একজনকে কমিয়ে বিরাট লাভ। হিতে বিপরীত ঘটনা ঘটবে। ক’মাস বাকি লোকসভার? ক’দিনের জন্য মহুয়ার সাংসদ পদ কেড়ে নেবে? কৃষ্ণনগরের মানুষ, বাংলার মানুষ তারা জানবে যে, জোর করে চক্রান্ত করে, গায়ে জোরে একটা প্রতিবাদী কণ্ঠকে থামাতে এসব করা হয়েছে’।
ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর মতে, ‘মহুয়া মৈত্র মহাশয়া যদি ভুল করে থাকেন, তাহলে শাস্তি পাবেন। কিন্তু আমার মনে হয়, মহুয়া মৈত্রের বিষয়টা নিয়ে যতটা তৎপরতা দেখাচ্ছে, এর থেকে অনেক গুরুত্বপূ্র্ণ বিষয়গুলিকে তারা এড়িয়ে যাচ্ছে। অপরাধটা কী ছিল, অপরাধ এটাই আদানি-আম্বানিদের বিরুদ্ধে মুখ খোলা। আমার তো মনে হয়, এটাই সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে গিয়েছিল মহুয়া মৈত্র মহাশয়ার। তৎপরতা যদি অন্য় ক্ষেত্রে যদি দেখায়, অন্য়ন্য বিলের ক্ষেত্রে যেটা জনকল্যাণকর হবে, মানুষের জন্য কাজে লাগবে, দেশের জন্য কাজে লাগবে, তাহলে সাধুবাদ জানাতাম। ক্ষমতা আছে, ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে’।