মৃত রেলকর্মীর হত্যাকান্ডের তদন্তে ফরেন্সিক দল। জগাছার বাসিন্দা সুরেশ সাউ হত্যাকান্ডের তদন্তে এবার খেঁজুরতলায় পৌঁছালো এসআইটি টিমের ফরেন্সিক দল। ঘটনায় হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠীর নির্দেশে একটি এসআইটি গঠন করা হয়েছে। জগাছা থানা ও ডোমজুড় থানা আধিকারিকদের নিয়ে সিট গঠন করা হয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তদন্তে নেমে মৃত যুবকের স্ত্রী রাজলক্ষ্মী, মিঠুন ও শেখর তিনজনকে গ্রেফতার করে তাদের হাওড়া কোর্টে রবিবার পেশ করেছে পুলিশ। তাদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ডোমজুড় থানা অন্তর্গত খেজুরতলা এলাকায় ফরেনসিক দলকে সঙ্গে নিয়ে যান পুলিশ আধিকারিকরা।
সুত্র মোতাবেক, যে গ্যারেজে তাকে খুন করা হয়েছিল, গোটা গ্যারেজ চত্বর খতিয়ে দেখা হয় এবং আশপাশের এলাকা ঘুরে বেশকিছু নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক দল। এই খেঁজুরতলাতেই মৃত সুরেশের বাস দেখাশোনার কাজ করতো ধৃত মিঠুন। সোমবার দুপুরে ডোমজুড় ও জগাছা থানার যৌথ অভিযানে আসে রাজ্য ফরেন্সিক দল। যদিও তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ্যে তাঁরা এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেন নি। উল্লেখ্য, ধরহীন মাথা উদ্ধার করে জগাছা থানার পুলিশ। হাওড়ার নিবরা এলাকা থেকে উদ্ধার হয় মৃত সুরেশের মাথা। বিজয়া দশমীর দিন সুরেশের মাথাহীন দেহ উদ্ধার হয়।
এরপর এই ঘটনায় যুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সলপ এলাকায় নিবরার একটি চায়ের দোকানের পিছনের পরিত্যক্ত জমি থেকে সুরেশের মাথা উদ্ধার হয় একটি বস্তার মধ্যে থেকে। যদিও বিজয়া দশমীর দিনে বস্তাবন্দী মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা এলাকায়। কয়েকদিন ধরেই সুরেশকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। জগাছা থানাতে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জমা করা হয় তার পরিবারের তরফ থেকে। ঘটনার সময় তার স্ত্রী ও সন্তান দেশের বাড়িতে ছিল বলে জানান তার স্ত্রী। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, মৃত সুরেশের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল মিঠুর।
আরও পড়ুন – দেওয়াল কেটে ব্যাঙ্কে চুরি, এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য, উঠছে একাধিক প্রশ্ন
পাশাপাশি সুরেশের দু’টি বাস দেখাশোনার দায়িত্বে ছিল এই মিঠু। মূলত সুরেশকে হত্যা করে দু’জনের মাঝখান থেকে সরিয়ে ফেলার চক্রান্ত করে মিঠু। এই কাজে সে সুরেশের শ্যালিকার ছেলে শেখরকেও যুক্ত করে। সুরেশের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে খুনের ঘটনার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে পুলিশ। হত্যাকান্ডের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করে পুলিশ। এরপরই এই হত্যকান্ডের কিনারা করতে মিঠু ও শেখরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরার মুখে দু’জনেই সুরেশকে খুন করার কথা স্বীকার করে নেয় বলে পুলিশ সুত্রে জানা যায়।
পুলিশের অনুমান, সুরেশের শ্যালিকা ও তাঁর স্ত্রীও এই কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। তাই তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। আটক স্ত্রীর অভিযোগ, তাঁর বোনের মেয়েকে ধর্ষণ করে তাঁর স্বামী। এই ঘটনা তারই প্রতিশোধ। শালীর ছেলেকে নিয়ে ছক কষে স্বামীকে খুন করায় স্ত্রী রামেস্বরী সাউ। সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবেই স্বামীর দেহ থেকে মাথা আলাদা করে দেহ এক জায়গায় মাথা অন্য জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়। যদিও স্ত্রীর দাবিকে যাঁচাই করার পর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।