শাসকদলের মদতে অবৈধ ভাবে মাটি কেটে বিহারে পাচারের অভিযোগ। সরকারি নিয়ম না মেনে অবৈধ ভাবে হচ্ছে মাটি কাটা। সেই মাটি চলে যাচ্ছে বিহারে। অভিযোগ শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের মদতে হচ্ছে এই কাজ। স্থানীয়দের অভিযোগ এই ভাবে মাটি কাটার ফলে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। পাল্টা সাফাই তৃণমূলের। তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া সবটাই সংবাদ মাধ্যমের রটনা। অবৈধ ভাবে মাটি কেটে বিহারে পাচার করার অভিযোগ উঠেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের তুলসীহাটা এলাকায়।
কিছু দিন আগেই অবৈধ ভাবে মাটি কাটা নিয়ে সরগরম হয়েছিল জেলার রাজনীতি। রতুয়া এলাকাতে নদী তীরবর্তী অঞ্চল থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই নিয়ে সরব হন খোদ রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখার্জি। অবৈধ ভাবে মাটিকাটা রুখতে নিজে সেখানে গিয়ে পাহারা দেন তিনি। তারপরেই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। সেচ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও এই নিয়ে কঠোর বার্তা দেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অবাধে মাটি কাটা চলছে হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসীহাটা এলাকায়।
অভিযোগ প্রশাসনিক অনুমতি না নিয়ে নিয়মের বাইরে মাটি কাটা হচ্ছে সেখানে। তারপর সেই মাটি পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বিহারে। বিহারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সেই মাটি। প্রশ্ন উঠছে এই ঘটনা কি ভাবে প্রশাসনের নাখের ডগায় দিনের আলোতে হচ্ছে। কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না ভূমি সংস্কার দপ্তর। শাসকদলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা থাকার ফলেই কী নীরব প্রশাসন। স্থানীয় সূত্রেও সেই রকম দাবি করা হচ্ছে। এছাড়াও স্থানীয়দের অভিযোগ মাটি নিয়ে যাওয়ার ফলে রাস্তাঘাট নোংরা হচ্ছে। তাদের যাতায়াত করতে সমস্যা হচ্ছে।
বিজেপির অভিযোগ শাসকদলের মদত ছাড়া কি ভাবে বিহারে মাটি চলে যাচ্ছে। এলাকায় ইট ভাটা বা অন্যান্য যাদের অনুমতি নেওয়া আছে তারা মাটি পাচ্ছে না। পাল্টা তৃণমূলের দাবি নিয়ম মেনে মাটি কাটা হয়। নিয়ম না মানলে প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো যোগ নেই। সবটা সংবাদ মাধ্যমের রটনা। সমগ্র ঘটনা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানোতোর।
স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজ বলেন, এই ভাবে মাটি কাটার ফলে জমি নিচু হয়ে যাচ্ছে। মাটি নিয়ে যাওয়ার সময় প্রচন্ড ধুলো উড়ছে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে। তৃণমূলের নেতাদের মদতেই হয়তো হচ্ছে।
আরও পড়ুন – মহার্ঘ্যভাতা অবিলম্বে প্রদানের দাবি তুলে শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের দফতরে অভিযান
মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, মাটি প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নিয়ম মেনে কাটা হয়। তারপরও যদি কেউ অনুমতি না নেয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে এর কোন যোগ নেই। সংবাদ মাধ্যম সব কিছুতে তৃণমূলকে জড়িয়ে দিচ্ছে।
বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য কিষান কেডিয়া বলেন, শাসকদল এবং প্রশাসনের মদত ছাড়া এটা সম্ভব না। রয়েয়ালিটি ছাড়া নিয়ম না মেনে মাটি কাটছে। এরা জেলার নির্দেশ মানছে না। সামনে পঞ্চায়েত ভোট তাই কাটমানি খাওয়ার চেষ্টা।
প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে ভূমি সংস্কার দপ্তরের ভূমিকা। ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারিককে নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। সরকারি জমি দখল করা থেকে শুরু করে অবৈধ ভাবে মাটিকাটা। এলাকাবাসীর দাবি কি ভাবে প্রশাসনের সামনে এই সব হচ্ছে। বিরোধীদের দাবি সমস্ত কিছুর সঙ্গে যুক্ত শাসকদলের প্রভাবশালী নেতারা। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে সরগরম এলাকার রাজনীতি।