সাপের কামড়েও ওঝাতেই ভরসা, সময় নষ্টে প্রাণ গেল বছর চারেকের এক শিশুর। সাপের কামড়ে ফের ওঝার উপর ভরসা রেখে প্রাণ গেল মাত্র চার বছরের এক শিশুর। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার আকুই অঞ্চলের বুনকি গ্রামে। শিশুর মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে গতকাল সকালে কোনো একসময় সাপ কামড় দেয় ইন্দাস থানার বুনকি গ্রামের লক্ষ্মী হাঁসদা ও রেবতী হাঁসদার দ্বিতীয় সন্তান বছর চারেকের সঞ্জয় হাঁসদাকে। শরীর অসুস্থ হলেও সঞ্জয়কে সাপে কামড় দিয়েছে তা ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারেননি বাবা লক্ষ্মী হাঁসদা ও মা রেবতী হাঁসদা। সঞ্জয়ের শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই এলাকার বেরঘোষ গ্রামের প্রিয়াঙ্কা মল্লিক ওরফে নন্দিনী নামের এক মহিলা ওঝার কাছে সঞ্জয়কে নিয়ে যান তার বাবা ও মা। ওঝা প্রিয়াঙ্কা মল্লিক ওই শিশুকে দেখে তার কপালে সিঁদূরের তিলক এঁকে দেন।
আরও পড়ুন – কাঁথি পুরসভা ডেপুটেশন দিতে এসে কাউন্সিলরের হাতে শ্লীলতাহানি শিকার এক মহিলা
বলেন শিশুটিকে খারাপ আত্মায় ধরেছে। ওই আত্মাকে ছাড়ানোর জন্য ঝাড়ফুঁকের প্রয়োজন। সেজন্য সন্ধ্যে বেলায় শিশুটিকে তাঁর কাছে ফের নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। এর মাঝেই দুপুরের দিকে শিশুটির অসুস্থতা বাড়তে শুরু করে। এরপর শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইন্দাস ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। এরপর ইন্দাস ব্লক হাসপাতাল তড়িঘড়ি তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে।
কিন্তু বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়। শিশুটির পরিবারের দাবী ওঝা সময় নষ্ট করাতেই শিশুটিকে এভাবে অকালে চলে যেতে হল। ওঝার দাবী তিনি শিশুটির ঝাড়ফুঁক করেননি। শিশুর পরিবার তাঁর কাছে আসতেই তিনি শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। যুক্তিবাদী সমিতির দাবী সাপের কামড়ের সঠিক লক্ষণ না জানা ও ওঝার উপর মানুষের অন্ধ বিস্বাসের কারনেই এই শিশুটিকে হারাতে হল। এ ব্যাপারে আরো সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।