লাল কাঁকড়ায় মোড়া সমুদ্র সৈকতের গল্প শোনালেন রায়গঞ্জের ১১ অভিযাত্রী

লাল কাঁকড়ায় মোড়া সমুদ্র সৈকতের গল্প শোনালেন রায়গঞ্জের ১১ অভিযাত্রী। ১৫ থেকে ২০ কিমি দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত যেন লাল রঙা আবিরে সেজে উঠেছে। দূরে সবুজ রঙা ঝাউবন। তারই সামনে এই লাল কার্পেট আসলে সমুদ্রের পাড়ে লাল কাঁকড়ার মেলা।

 

এমন গল্প গুলোই শোনালেন রায়গঞ্জ হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স এন্ড ট্রেকার্স অ্যাসোশিয়নের এবারের সৈকত ট্রেকের দলপতি তাপস জোয়ারদার। তিনি বলেন, ওড়িশা রাজ্যের সৈকত শহর চাঁদিপুর বালাসোর জেলায় অবস্থিত। অপরদিকে পশ্চিম বঙ্গের সৈকত শহর দীঘা পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত। এই ২ শহরের মধ্যে কোষ্টাল ট্রেকে পা বাড়িয়েছিলাম আমরা রায়গঞ্জের পাহাড়ি ক্লাব হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স এন্ড ট্রেকার্স এসোসিয়েশনের ১১ সদস্য।

 

গত ২০শে জানুয়ারি রায়গঞ্জ থেকে যাত্রা শুরু করে এই ট্রেকিং শেষ করি দীঘায়। জানা গেছে, রায়গঞ্জের একমাত্র প্রকৃতি প্রেমী পাহাড়ি ক্লাব হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স এন্ড ট্রেকার্স এসোসিয়েশন বা হিমতার ব্যানারে গত শুক্রবার রাতের রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে চেপে কোষ্টাল ট্রেকে পা বাড়ান ১১ জনের অভিযাত্রী দল। দলটি শনিবার বিকেলে পৌঁছায় ওড়িশা রাজ্যের বালাসোরের সমুদ্র সৈকত শহর চাঁদিপুরে। উল্লেখ্য, এই চাঁদিপুরেই রয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষনা সংস্থা ইসরোর মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র। অভিযাত্রী দলটি সেগুলোকে পিছনে ফেলে সমুদ্রের তীর দিয়ে প্রথম দিন হেঁটে পৌছায় কষাফল। পরদিন দাগারা এবং শেষ দিন ট্রেক করে পৌঁছায় পশ্চিম বঙ্গের সৈকত শহর দীঘাতে।

 

এই কোষ্টাল ট্রেকের দলনেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাপস জোয়ারদার। এদিন রায়গঞ্জ পৌঁছে তিনি বলেন, প্রথম দিনের ট্রেকে চাঁদিপুর সৈকত ধরে হাঁটতে হাঁটতে আমরা ইতিহাস ছোঁয়া বুড়ি বালামের তীরে এসে পৌঁছাই। এই বুড়ি বালামের তীরেই ইংরেজ আমলে এক অসম বন্দুকের লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন ভারতীয় তরুন। কষাফলে রাত কাটিয়ে ট্রেকের দ্বিতীয় দিনের ২২ কিমি রাস্তার প্রায় পুরোটাই ছিল জনমানব শূন্য লাল কাঁকড়ার স্বর্গরাজ্য। তাদেরকে দেখতে দেখতেই চড়া রোদে আমরা পৌঁছে যাই দাগারাতে।

আরও পড়ুন – মধ্যপ্রদেশে পুরসভা নির্বাচনে বিজেপির বড় জয়

শেষ দিনে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে দীঘায় এসে যাত্রা শেষ করি। তাপস বাবু এক দমে এই কথা গুলো বলার ফাঁকে আক্ষেপ করে বলেন, ট্রেকের সময় দেখলাম, চাঁদিপুর থেকে সৈকত বরাবর মেরিন ড্রাইভ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্রকৃতির স্বাভাবিক সৌন্দর্য সরিয়ে, উন্নয়নের নামে সমুদ্র সৈকতকে ইট, পাথর, সিমেন্ট দিয়ে বেঁধে ফেলার এই প্রচেষ্টা প্রকৃতি কতটা মেনে নেবে, সেটা সময়ই বলবে। অভিযাত্রী দলটিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হিমতার সদস্যরা। তাদের পক্ষে সংস্থার সম্পাদক অপর্ণা চক্রবর্তী বলেন, আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযাত্রীদের শুভেচ্ছা জানাই। বুধবার রাতে দলটি রায়গঞ্জ ফিরলে তাঁদেরকে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন রায়গঞ্জের বিশিষ্ট অভিযাত্রী ও বহু সাধারণ মানুষ।