রেলের জমিতে থাকা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সর্বস্ব হারা ১৬টি পরিবার। শিলিগুড়ি শহরে রেলের জমিতে থাকা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সর্বস্ব হারা ১৬টি পরিবার।শেষ সম্বল রক্ষার মরিয়া চেষ্টায় আগুনের তাপে ক্ষতবিক্ষত চেহারা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উমাতুর বেগম।
রবিবার শহরে ফিরেই ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ পৌছলেন মেয়র গৌতম দেব। সোমবার জেলাশাসক এস পূণ্নম বল্লামের সঙ্গে জরুরী বৈঠক করে নিঃস্ব পরিবার পিছু ক্ষতিপূরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়ে দেন মেয়র গৌতম দেব।
শনিবারের পর ২৪ঘন্টা কেঁটে গেলেও সাজানো সংসারের ধ্বংসস্তূপ আঁকড়ে রয়েছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের এক নাম্বার ওয়ার্ডের কুলি পাড়ার ধর্মনগরের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলি। চাল, চুলো কিছুই নেই তবু ত্রিপল টাঙিয়ে ভস্মীভূত ভিটে মাটি টুকু আকড়ে রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা। শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে যায় এলাকার ১৬ টি ছাপড়া বাড়ি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরো তিন থেকে চারটি ঘর। তিন থেকে চার জন আগুনে জখম হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কয়েক লক্ষ টাকা। আগুন জ্বলছে ঘর, সেসময় আগুনের মাঝেই সঞ্চয়ের কিছু টাকা উমাতুরব বেগম। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তার আগুনের তাপে ঘর থেকে টাকা বের করে আনতে গিয়ে আগুনের কবলে চলে আসে।তার মুখের বিস্তৃন আগুনে জখম হয়েছে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে মহিলা। পরিবারের তরফে রিতা খাতুন বলেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চলছে।
যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। এক দিকে অসুস্থ অন্যদিকে চাল চুলো হারা হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। যদিও এলাকাবাসীরা একযোগে বলছেন কাউন্সিলর সঞ্জয় পাঠক, পুরনিগম থেকে দিনে রাত রান্না করা খাবার মিলছে। রাতারাতি তারা ত্রিপল, প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন। তাদের দাবি এখন কোন রকমে যা ক্ষতি হয়েছে সে রকম তিন ইটকার জোড়া লাগিয়ে মাথার গোজার জন্য ঘর যদি পুরনিগমের তরফে করে দেওয়া হয় তাহলেই যথেষ্ট।
আরও পড়ুন – এবার নয়া দুর্নীতি নিয়ে বোমা ফাটালেন দিলীপ ঘোষ, কি সেই দুর্নীতি
এদিন এলাকা এলাকায় পৌঁছে অসহায় পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন মেয়র গৌতম দেব। মেয়র ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে সব রকমের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। মেয়র বলেন- আমি শহরের বাইরে ছিলাম। ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার পুরো বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। স্থানীয় যুবকেরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলের সঙ্গে খুব ভালো কাজ করেছে। দমকল দ্রুততার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পরই কাউন্সিলারের কাছ থেকে খোঁজ নিয়েছি। পুরনিগমের তরফে তৎপরতার সঙ্গে ত্রাণ বিলি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়মিত খাবার প্রদান করা হচ্ছে।
ক্ষতিপূরণের বিষয় নিয়ে মেয়র জানান- কাউন্সিলরের সঙ্গে বসে সোমহার আলোচনা করব। জেলাশাসকের সঙ্গেও এদিনই পুরো নিগমের জরুরি বৈঠক করে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে অলোচনা হবে। এদিকে স্থানীয়দের দাবি কয়েক মাস আগে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে রেলের জমিতে আরো এক বস্তিতে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর যেভাবে পুরনিগমের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের অস্থায়ী পরিকাঠামোয় ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রেও কোনরকমে টিন ইট কাঠ দিয়ে হলেও যেরকম ছিল সেভাবে ঘর তৈরি করে দিক পুরনিগম। কাউন্সিলর সঞ্জয় পাঠক বলেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৎপরতার সঙ্গে ভূমিকা গ্রহণ করেছে।আমি আশাবাদী এক্ষেত্রেও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে পুর বোর্ড।