শনিবার হাজরায় ডিএ আন্দোলনের পাল্টা জবাব দিল তৃণমূলপন্থী সরকারি কর্মচারীরা, তৃণমূলের গড় দক্ষিণ কলকাতায় এ বার শক্তি প্রদর্শন করল পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন। শনিবার তারা হাজরা মোড়ে আয়োজিত এক সভায় দলের প্রায় প্রথম সারির নেতাদের হাজির করিয়ে বার্তা দিতে চাইল বিরোধী সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলিকে। সভায় হাজির হয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বিরোধী সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলিকে কখনও নাম করে, আবার কখনও নাম না করে আক্রমণ শানালেন।
এর পরেই পাল্টা সভা করে বিরোধী সংগঠনগুলিকে জবাব দেওয়ার কৌশল নেয় তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন। স্থির হয় দলের প্রথম সারির নেতাদের পাশাপাশি, রাজ্যের মন্ত্রীদের এনে সভা করিয়ে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। মন্ত্রী মানস এবং ফেডারেশন নেতৃত্বকে আগামী দিনে ব্রিগেড ময়দানে সমাবেশ আয়োজন করার নির্দেশ দেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত। সভায় মানস জানিয়ে দেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁরা নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে একটি বড় সভার আয়োজন করবেন।
আরও পড়ুন – মাথায় হাত সাধারণ মানুষের! বিদ্যুতের দাম বাড়ছে অসমে,
সভামঞ্চ থেকে মন্ত্রী অরূপ বলেন, ‘‘এই সভা দেখে আমাদের বলতে ইচ্ছে করছে, এই কো-অর্ডিনেশন দেখে যা ফেডারেশনের ক্ষমতা। আজ এই সভা করে ফেডারেশন ওই কো-অর্ডিনেশন কমিটিকে বুঝিয়ে দিল যে সরকারি কর্মচারীরা এখনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছেন।’’ মন্ত্রী ব্রাত্য আবার আশ্বাসের সুরে বলেন, ‘‘আপনাদের ডিএ পাওয়া কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু ভাবুন আপনারা গরিব মানুষকে একটু সাহায্য করছেন। বামপন্থীরা পাপ-পুণ্য মানেন না। আপনারা মানেন না, আমরা মানি। মুখ্যমন্ত্রী তো বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব মানুষকে সাহায্য করছেন।’’
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ বলেন, ‘‘২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি হেরে গেলেই রাজ্য তার প্রাপ্য পাওনা পেয়ে যাবে, তার পর আর আপনাদের ডিএ নিয়ে কোনও সমস্যা থাকবে না। এই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের ন্যায্য পাওনা আটকে রাখাতেই এই সমস্যা হচ্ছে।’’ হাজির অন্যান্য মন্ত্রীরাও বকেয়া ডিএর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার দিকেই আঙুল তুলেছেন।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস যাবৎ মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন করে চলেছে। গত ৬ মে আবার এই হাজরা মোড়েই আয়োজিত সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সভায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের হয়ে সওয়াল করেছিলেন বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। ডিএর দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের এই আন্দোলনকে যুক্তিযুক্ত বলে মমতার সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন এই দুই নেতা। পাশাপাশি, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে মিছিল করেছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। শান্তি রক্ষা-সহ কিছু শর্তে হরিশ মুখার্জি রোড ধরে সেই মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের অনুমতি নিয়ে সেই মিছিলও করা হয়েছিল।