অবশেষে যাবতীয় জট কেটে শনিবার রাজভবনে শপথ নেবেন ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়। শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শপথগ্রহণের জন্য শুক্রবার সপরিবারে কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছন তৃণমূল বিধায়ক। কিন্তু বিমান বন্দরে নেমেই বাঁধে বিপত্তি। কিড স্ট্রিটের এম এল এ হস্টেলে রওনা দেওয়ার জন্য কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিনি কোনও গাড়ি পাননি। অবশেষে অ্যাপ ক্যাব ভাড়া করে MLA হস্টেলের দিকে রওনা দেন বিধায়ক। জানা গিয়েছে, শনিবার শপথগ্রহণের আগেই আজই তিনি পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন।
আরও পড়ুন: রাজভবনেই শপথ ধূপগুড়ির বিধায়কের
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘ভোটের ফল ঘোষণার বেশ কয়েকদিন পর শপথের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়েছে। এটা জেনেই ভালো লাগছে। প্রথমেই পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করব। আমার পরবর্তী কর্মসূচিগুলি উনিই ঠিক করে দেবেন। উনি আমাদের দলের অনেক সিনিয়র নেতা। তার পরামর্শ মেনেই কাজ করব। যোগাযোগের গণ্ডগোলের কারণে শপথগ্রহণ দিনক্ষণ স্থির হতে দেরি হয়েছে।’
ধূপগুড়ির উপনির্বাচন ও সেখানকার মানুষদের জন্য তাঁর আগামী দিন কী পরিকল্পনা? সাংবাদিকদের প্রশ্নের সেই নিয়েও মুখ খুলেছেন নব নির্বাচিত বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে আমাদের যেটা প্রথম প্রতিশ্রুতি ছিল, সেটা হয়ে গিয়েছে। ধূপগুড়িকে পৃথক মহকুমা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিয়েছেন। এখন প্রশাসনিক প্রক্রিয়া চলছে। সেই কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।’
উল্লেখ্য, ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল জিতলে তিনি ধূপগুড়িতে পৃথম মহকুমা করার প্রতিশ্রুতি দেন। ৮ সেপ্টেম্বর ভোটের ফল প্রকাশের পর প্রায় ৪৪০০ ভোটে জয়ী হন তৃণমূলের নির্মলচন্দ্র রায়। তার কয়েকদিনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধূপগুড়িকে পৃথক মহকুমা করার কথা ঘোষণা করেন।
ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়েও রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ধূপগুড়ি বিধায়কের শপথগ্রহণের জন্য রাজ্যপালকে চিঠি লেখেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। পালটা রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানান, ধূপগুড়ির বিধায়ক রাজবংশী সমাজের প্রতিনিধি। তাই তাঁকে রাজভবনে শপথগ্রহণ করাতে চান বলে জানান রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রী সেই চিঠি বিধানসভার অধ্যক্ষকে পাঠিয়ে দেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পালটা রাজ্যপালকে চিঠি লিখে বিধানসভায় ধূপগুড়ির বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানোর আবেদন করেন। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি রাজভবন। এমনকী রাজভবনের তরফে গত শনিবার নব নির্বাচিত বিধায়কের প্রস্তুতিও সেরে ফেলা হয়। কিন্তু সেদিন ধূপগুড়ির বিধায়ক শপথ নিতে এসে পৌঁছননি।