১০ বছর আগে কামদুনিতে এক কলেজের ছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিল। সেই নৃশংতা হত্যা পর গোটা প্রশাসন নড়ে উঠেছিল। নিম্ন আদালত থেকে তিনজন অপরাধীকে মৃত্যুদন্ড ও তিনজনকে আজীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে উঠেছিল মামলা। শুক্রবার আদালত ফাঁসির সাজা মকুব করে দিয়ে দুজনকে আজীবন কারাদন্ড দেয়। রায় ঘোষণার পর আজ পথে নামছে প্রতিবাদীরা। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে পথে নামবে বিজেপির মহিলা মোর্চা। কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়াই মিছিলে অংশ নিতে আবেদন জানানো হয়েছে। দুপুর ১টা নাগাদ কামদুনি বাস স্ট্যান্ডে জমায়েত, সেখান থেকে শুরু হবে মিছিল। ধর্মতলা থেকে মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত মিছিল।
আরও পড়ুনঃ রাজভবনের সামনে ধর্ণা হলে মহাকরণের সামনে কেন নয়? রাজ্যের কাছে জবাব চাইল আদালত
২০১৩ সালের ৭ জুন উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করার ঘটনা ঘটে। সিআইডি তদন্ত করছিল ওই মামলায়। ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে প্রমাণের অভাবে দুজনকে জামিন দেওয়া হয়। এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছে মামলা চলাকালীন। কলকাতার নগদ দায়রা আদালত ছ’জন অভিযুক্তের সাজা ঘোষণা করেছিল। দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল সইফুল মোল্লা, আনসার মোল্লা, আমিন আলি, এমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর ও আমিনুল ইসলামকে। শরিফুল আলি, আনসার আলি ও আমিন আলিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। বাকি তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে ২০১৬ সালে আদালতের রায় শোনার পরই নিহত ছাত্রীর মা ও ভাই জানিয়েছিলেন, তাঁরা চান অভিযুক্তদের সকলের ফাঁসি হোক।
কামদুনি-মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করল রাজ্য। হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারির আবেদন জানিয়ে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে। ২০১৩ সালের কামদুনি গণধর্ষণ-খুনের মামলায় গত ৬ অক্টোবর রায় ঘোষণা করে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ। ওই দিনই সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের কাছে মামলা সংক্রান্ত সমস্ত নথি ও হাইকোর্টের নির্দেশের কপি পাঠানো হয় স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিলের জন্য।
শুক্রবার হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পর নির্যাতিতা পরিবারের তরফে বলা হয়,’ আমরা চেয়েছিলাম দোষীদের যেনও দৃষ্টান্তমূলক শান্তি হোক। বারংবার মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) কাছে চিঠি দেওয়া, মেল করা সত্ত্বেও কোনও সদুত্তর আসেনি বলেই অভিযোগ তাঁদের। সরকারের কোনও সদিচ্ছা নেই, এটা তাঁরা মোটেই ভাল চোখে দেখছেন বলেই দাবি করেছেন। নিম্ন আদালতের রায়ই তাঁরা চেয়েছিলেন। তাঁদের কথায়,’ ৬ জন দোষী, ৬ জনেরই ফাঁসি চেয়েছিলাম। ১০ বছর আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি।’ কিন্তু এই রায়ে সন্তুষ্ট নন বলেই জানিয়েছেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা। এদিন তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এই রায় তাঁরা মেনে নিতে নারাজ। তাই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বার্তা দেন টুম্পা কয়াল।