রাজ্য বিধানসভায় আজ শুক্রবার থেকে শুরু হল শীতকালীন অধিবেশন। আর এই অধিবেশন শুরুর দিনই খাতায় সই করা নিয়ে বিতর্ক। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো শুরুর দিনই মন্ত্রীদের হাজিরা খাতায় সই করতে হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে দৃশ্যতই বিরক্তি প্রকাশ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, ”আমরা কি স্কুলে পড়ি নাকি! পার্টি বলেছে, তাই করলাম (সই)। কিন্তু এটার সঙ্গে আমি সহমত নই।”
এদিন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে রাখা ছিল মন্ত্রীদের হাজিরা খাতা। কে, কখন বিধানসভা অধিবেশনে প্রবেশ করছেন, সেই সময় উল্লেখ করে সই করতে হয়েছে। শুধু প্রবেশের সময় নয়। মন্ত্রীরা কখন বার হচ্ছেন সেই সময় উল্লেখ করে ফের এক বার সই করতে হবে। অর্থাত্ যা থেকে বোঝা যাবে, কোন মন্ত্রী কত ক্ষণ বিধানসভায় ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ধর্মতলায় শাহের সভার অনুমতি আদালতের, চ্যালেঞ্চ করে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে রাজ্য
মমতার নির্দেশেই এই অধিবেশন থেকে সময় উল্লেখ করে হাজিরা খাতায় সই করার ‘নিয়ম’ চালু হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশ নিয়েও ববি বিরক্তি প্রকাশ করলেন। যা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে শাসকদলের মধ্যেও। দলের নিয়ম বা অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে দ্বিমত পোষণ করা মন্ত্রী তথা কলকাতার মহানাগরিকের নতুন ঘটনা নয়। শুক্রবার ফের এক বার ববিকে দলের নিয়মের প্রকাশ্য ‘সমালোচনা’ করতে শোনা গেল। তাঁর সাফ কথা, ”নিজেদের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা তো স্কুলের বাচ্চা নই যে সই করতে হবে।” ববির পাশে দাঁড়ানো রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকও বলেন, ‘১১ বছর ধরে বিধানসভায় রয়েছি। এক দিনও কামাই করিনি।” যদিও এই নতুন নিয়ম নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।
গত মার্চ মাসে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে ববির সব বিষয়ে কথা বলা নিয়ে ভর্ত্সনা করেছিলেন মমতা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল, মেয়রের উদ্দেশে মমতা বলেছেন, ”ববি তুই বেশি কথা বলছিস। কর্পোরেশন নিয়ে বলবি। তার বাইরে কোনও বিষয়ে তোকে কথা বলতে হবে না। বলার আগে আমায় জিজ্ঞেস করে নিবি।” তার পর দেখা গিয়েছিল বেশ কিছু দিন ববি পুরসভার বাইরে কোনও কিছু নিয়েই প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন না। পুরসভার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে অন্য বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ববি বলেছিলেন, ‘কণ্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে, বাঁশি সঙ্গীতহারা…’! মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কে তৃণমূল যখন দলগত ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দিচ্ছিল না, তখনও ববি বলেছিলেন, ”মহুয়া বেশি ভোকাল বলে ওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।” যদিও বৃহস্পতিবারের সভা থেকে মমতা সরাসরিই মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে সই নিয়ে তাঁর মন্তব্য শাসকদলের মধ্যে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে।