রাজ্য – বাংলার বাঙালি এবার পুজোর আনন্দের আগে আতঙ্কে। যে হারে সেপ্টেম্বর মাসে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, পুজোতে কি বৃষ্টি হবে নাকি আনন্দ জলের সঙ্গে ধুয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই একটি নতুন নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে, যার প্রভাবে বৃষ্টি অব্যাহত।মৌসম ভবন জানিয়েছে, পুজোর সময়ও বাংলা বৃষ্টিতে ভিজতে পারে। গোটা সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফরও পুজোর সময় বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে।হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর বর্ষার ছন্দে থাকবে এবং বিদায় নেবে না। তার জন্যই বৃষ্টির আশঙ্কা শুরু থেকেই ছিল। স্বাভাবিকের তুলনায় এই মাসে বৃষ্টিপাত কিছুটা বেশি হবে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।এর প্রভাব পড়তে পারে পুজোর প্রস্তুতিতে। কেনাকাটা, মণ্ডপ তৈরি, প্রতিমা নির্মাণ—সবকিছুতে বৃষ্টির কারণে নাজেহাল হতে হবে বাঙালিকে। শিল্পীরা ও পুজো উদ্যোক্তারা ইতিমধ্যেই সতর্ক হয়ে গেছেন।আজ মঙ্গলবার মৌসম ভবনের ডিজি মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র ও আলিপুর আবহাওয়া দফরের কর্মকর্তারা সাংবাদিক বৈঠকে আলাদা করে জানিয়েছেন, পুজোর সময় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তবে কতটা বৃষ্টি হবে, রোজ বৃষ্টি হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বিশেষ করে মহালয়ার সপ্তাহে বৃষ্টি বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এই সময়ে মণ্ডপ নির্মাণ ও প্রতিমা তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। হাওয়া অফিসের অনুমান অনুযায়ী, বহু এলাকায় প্রস্তুতি কাজ বিলম্বিত হতে পারে।প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন, ভেজা পরিবেশে মাটির মণ্ডপে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সময়মতো মণ্ডপ তৈরি করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বৃষ্টির জন্য তারা বিকল্প ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন।পুজোর কেনাকাটাও প্রভাবিত হতে পারে। বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতারা বৃষ্টির কারণে কম দেখা দিতে পারেন। ফলে পুজোর জিনিসপত্র ক্রয়ে বিলম্ব হতে পারে।স্থানীয় প্রশাসন ও পুজো কমিটিগুলিও ইতিমধ্যেই সতর্ক হয়েছে। তারা মণ্ডপ প্রস্তুতি ও পরিদর্শনের সময় বৃষ্টির সম্ভাবনা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করছে।পর্যটক ও দর্শনার্থীরাও পুজোর আনন্দ উপভোগে ঝুঁকি বিবেচনা করতে পারেন। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কোথায় কোথায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে তা আগেই জানানো হচ্ছে।মৌসম ভবন জানিয়েছে, নিম্নচাপের গতিবিধি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বাড়লে তাৎক্ষণিক সতর্কতা দেওয়া হবে।
এভাবে, পুজোর আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালিকে এবার বৃষ্টির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রস্তুতি বিলম্ব হলে বৃষ্টির প্রভাব আরও বড় হতে পারে।স্থানীয়রা ইতিমধ্যেই মণ্ডপ ও বাজারে ছাদ ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করছেন। বৃষ্টির কারণে ক্ষতি এড়াতে এই ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ।বৃষ্টি যদিও আনন্দকে নষ্ট করতে পারে, তবে হাওয়া অফিস মনে করিয়ে দিচ্ছে, পর্যবেক্ষণ ও সতর্কতার মাধ্যমে ক্ষতি কমানো সম্ভব।মহালয়ার আগে বৃষ্টি বেশি হতে পারে বলে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। এ সময় মণ্ডপ নির্মাণ ও পুজোর সাজসজ্জায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুজো কমিটিগুলোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।অবশেষে, হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুসারে, বাঙালিকে এবার পুজোর আনন্দের সঙ্গে বৃষ্টির মোকাবিলারও প্রস্তুতি রাখতে হবে।
