কচুরিপানা আনছে সোনা। বহু বছর ধরেই নাবত্য হারিয়ে কচুরিপানায় ঢেকেছে ইছামতী নদী। এবার সেই কচুরিপানা দিয়ে মহিলাদের হস্তশিল্পের সামগ্রী তৈরি করার প্রশিক্ষণ দিল বনগাঁ পুরসভা। পুরসভার তরফে দাবি, এতে একদিকে নদী পরিষ্কার থাকবে, অন্যদিকে মহিলারা স্বনির্ভর হয়ে উঠবেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে ইছামতীতে জোয়ার ভাটা খেলত। নদীর জল স্নান করা, মাছ ধরা, চাষের কাজে ব্যবহার করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তা বন্ধ। বর্তমানে গোটা নদী ঢেকেছে কচুরিপানায়। জলের দেখা মেলে না বললেই চলে। কচুরিপানা দীর্ঘদিন জমে থেকে তা পচে নদীর তলদেশে জমা হয়ে নদীর গভীরতা কমিয়ে দিচ্ছে।
বাড়ছে জল দূষণ। তার উপর, কচুরিপানার কারণে মশা ও সাপের উপদ্রবে বেড়ে গিয়েছে এলাকায়। সমস্যার সমাধানে কচুরিপানা দিয়ে হস্তশিল্পের সামগ্রী তৈরি করার ব্যবস্থা করল বনগাঁ পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, দিনকয়েক আগে প্রায় ৫০০ জন মহিলাকে একটি কর্মশালার মাধ্যমে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কর্মশালার শিরোনাম ছিল কচুরিপানা আনবে সোনা’।
প্রশিক্ষিত মহিলারা ইতিমধ্যেই কচুরিপানার ব্যাগ, ফাইল, টুপি, রাখি-সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করা শিখেছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, কচুরিপানার সামগ্রী তৈরির মাধ্যমে আমরা মহিলাদের অর্থনৈতিক ভাবে স্বনির্ভর করার পরিকল্পনা করেছি। এতে একদিকে নদী কচুরিপানা মুক্ত থাকবে। অন্যদিকে মহিলাদের আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। পুরসভা সূত্রে জানা যায় মহিলারা নিজেরাই নদী থেকে কচুরিপানা তুলে আনবেন। সেই কচুরিপানা কেজি প্রতি ৬৫ টাকায় কিনবে পুরসভা।
আরও পড়ুন – আইজ্যাক লিটন: বাংলা ওয়েব সিরিজে ভিন্নধর্মী গল্পের সূচনা
কচুরিপানা শুকিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া মহিলাদের হাতে বিনামূল্যে তুলে দেওয়া হবে। মহিলারা বাড়ি বসেই হস্তশিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করবেন তা দিয়ে। পুরসভা সেই সামগ্রী আবার তাঁদের কাছ থেকে কিনে নেবে। বিনিময়ে টাকা দেওয়া হবে মহিলাদের। পুরসভা সেই সামগ্রী অন্যত্র বিক্রির ব্যবস্থা করবে। অর্থাৎ কচুরিপানা বিক্রি ও হস্তশিল্পের সামগ্রী বিক্রি— এই দু’ভাবে আয় করার সুযোগ পাবেন মহিলারা