ট্র্যাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ আনলেন ওস্তাদ রশিদ খানের স্ত্রী

ট্র্যাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ আনলেন ওস্তাদ রশিদ খানের স্ত্রী

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

ট্র্যাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ আনলেন ওস্তাদ রশিদ খানের স্ত্রী। বুধবার ভোর রাতে পুলিসের হয়রানির মুখে পড়েন উস্তাদ রশিদ খানের ড্রাইভার যার নাম রঞ্জিত ওঝা। ভোররাতে এয়ারপোর্ট থেকে রশিদ খানের গাড়ি ড্রাইভ করে তিনি একাই ফিরছিলেন। সেইসময়ই ‘ড্রিঙ্ক অ্যান্ড ড্রাইভ’ কেসে বেলেঘাটায় তাঁকে পুলিস আটক করেন।

 

যদিও তাঁর ড্রাইভার ও রশিদ খানের পরিবারের বক্তব্য, তিনি কোনওরকম নেশার পানীয় পান করেননি। এরপর কার্যত জোর করেই অন্য এক ব্যক্তি সেই গাড়ি ড্রাইভ করে নিয়ে যান প্রগতি ময়দান থানায়। সেখানেই ভোর ৪টের সময় গাড়ি ছাড়াতে গিয়ে পুলিসের অশ্লীল কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় উস্তাদ রশিদ খানের স্ত্রী ও মেয়েকে। এমনকী ভোর রাতে থানায় ডেকে পাঠানো হয় রশিদ খানকেও।রশিদ খানের স্ত্রী জয়িতা বসু খান মিডিয়াকে

 

জানান, ‘’মঙ্গলবার রাতে উস্তাদ রশিদের শো ছিল, অন্যান্যদিনের মতোই তাঁর বাড়ি ফিরতে বেজে যায় প্রায় রাত আড়াইটে। এদিন অনুষ্ঠানে রশিদ খানকে হারমোনিয়ামে সঙ্গত দিচ্ছিলেন ড. বিনয় মিশ্র, তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর। তাঁকে ছাড়তে বিমানবন্দরে গিয়েছিল আমাদের ম্যানেজার ও ড্রাইভার। বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ড ওকে ধরে। ও একা নয়, এরকম অনেককেই আটকে রেখেছিল। কেউ ৫০০ টাকা কেউ ১০০০ টাকা দিয়ে চলে যাচ্ছে। আমাদের ম্যানেজারকে জিগেস করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে পার্কিংয়ের ছাড়া আর কোনও টাকা নেই।

 

তখন তাঁকে বলা হয়, ‘টাকা দে নইলে তোকেও জেলে ভরে দেব ড্রিঙ্ক অ্যান্ড ড্রাইভ কেসে‘। এরপর ওর টেস্ট করে, দুবারের বদলে একবার ফুঁ দেওয়ায় আর এরপরেই একজন অজানা ব্যক্তি আমাদের গাড়ি নিয়ে প্রগতি ময়দান থানায় চলে যায়।’’তিনি আরও বলেন, ‘‘যে ড্রাইভ করছিল, সে আমাদের ম্যানেজারকে বলে ওখানে ৫০০, হাজার দিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে নেবেন। তখন আমাদের ম্যানেজার বলেন, কিন্তু আমরা করেছি কী? কিন্তু ওকেও বলা হয়, বেশি কথা বললে তোমাকেও ঢুকিয়ে দেব। প্রগতি ময়দান থানার ডিউটি অফিসার ছিলেন মিস্টার লামা অশ্রাব্য গালিগালাজ তাঁর, মুখের ভাষা শোনা যায় না।

 

তাঁর দাবি সে আইনজীবী, তাঁকে ৬০০০ টাকা দিলে পরেরদিন জামিন হয়ে যাবে। কোন এক আইনজীবী রাতে থানায় বসে ছিলেন ! আর কীসের জামিন? অশ্রাব্য ভাষায় আমায় বললেন ওনার সঙ্গে কথা বলতে হলে পুলিস স্টেশন যেতে হবে। ভোর ৪টের সময় আমি আর আমার ছোট মেয়ে পুলিস স্টেশনে পৌঁছাই। ওখানে আমাদের অনেকক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখার পর একজনের কাছে পাঠানো হল। তিনি পৃথ্বীশ মিস্ত্রি, উনি নাকি ছোটবাবু, তাঁর যা মুখে ভাষা তা অকল্পনীয়। আমার অপরাধ যে আমি শুধু জানতে চেয়েছিকারণে আমার গাড়ি আটক করা হয়েছে?

 

আপনি কেন আমার চাবি জমা করেছেন? তিনি অশ্রাব্য ভাষায় আমার উত্তর দিলেন। ঐ চেয়ারে বসতে তো মিনিমাম শিক্ষা লাগে, সেই অর্থে এক ভদ্রলোকের ঐ মুখের ভাষার আমার ধারণা ছিল না। আমি বললাম, আপনি বাধ্য কারণ আপনি পাবলিক সার্ভেন্ট। আপনি যখন চাবি সমেত গাড়ি রেখেছেন, তখন আমায় সেটা লিখে দিন। তখন আমায় বলছে, আপনি গাড়ি নিয়ে যান, কিন্তু ঐ ড্রাইভার চালাবে না। আগে কিন্তু এই কথাটা বলেনি। ড্রিংক অ্যান্ড ড্রাইভ থেকে কেস বদলে তখন তাঁকে রাফ ড্রাইভের কেস দিয়ে দেয়।

আরও পড়ুন – আন্তরাজ্য চন্দন কাঠ পাচারকারী চক্রের হদিশ,গ্রেপ্তার ৪

’’তিনি আরও বলেন, ‘‘এরপর আমার মেয়েকে বলায় হয় যে লিখে দিতে, আমার গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হোক। আমার মেয়ের লেখা দেখে তাঁকেও হেয় করে ঐ মিস্টার লামা। এরপর ওরা গাড়ির নাম দেখে জানতে পারে গাড়ির মালিক উস্তাদ রশিদ খান। তখন তাঁকে ডেকে আনতে বলেন। আমি বলি যে, ‘পদ্মভূষণ, বঙ্গভূষণ উস্তাদ রশিদ খানকে আপনি ভোর ৪টের সময় থানায় ডাকতে বলছেন, গাড়ি ছাড়ানোর জন্য?’ ডাকতেই হবে জানিয়ে দেয় থানা থেকে।

 

এরপর আমার স্বামী ও আমার ছেলে গেল। রশিদ নমস্কার করলে কোনও জবাব নেই, বসতেও বলেনি। ওঁকে বলেন, সাইন করুন গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছি। রশিদ বলেন, কেন আমার গাড়ি আটক করেছেন সেটা না বললে আমি সাইন করব না। আমার লিগাল টিম সকালবেলা আসবে। বুধবার সকাল ১০টায় আইনজীবীরা গেছে। আমরা লালবাজারেও লিখিত অভিযোগ জমা দেব। এটা শুধুমাত্র হয়রানির করার জন্য করা হয়েছে।’’ যদিও জয়িতা কোনো অভিযোগ করেননি। কারণ কার কাছে অভিযোগ করবেন সেটা ভেবেই পাচ্ছেন না।

 

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top