সোমবারের বিশেষ অধিবেশনে পাশ হয়নি বেতন বৃদ্ধির বিল। কারণ রাজ্যপালের অনুমোদন মেলে নি। তবে মঙ্গলবার রাজ্যপালের তরফ থেকে অনুমোদন মেলে। কিন্তু মঙ্গলবার ছিল রাজ্য প্রশাসনের পুজোর ছুটি শুরুর আগে শেষদিন। বিধানসভার সচিবালয়েও চলছিল শেষদিনের কাজকর্ম। অচমকাই নবান্ন থেকে খবর আসে রাজ্যপাল দু’টি বিলে অনুমোদন দিয়েছেন। বিধানসভা সূত্রে খবর, এর পরেই পরিষদীয় দফতর থেকে বিধানসভার সচিবালয়ে খবর আসে লক্ষ্মীপুজোর পর সরকারি মহলে ছুটি শেষ হলেই আবারও একদিনের জন্য বসবে বিধানসভার অধিবেশন। সেখানেই জোড়া বেতন বিল পাশ করানো হবে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারি তরফে কিছুই জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: এবার ব্যারাকপুর লোকসভায় আয়োজিত হতে চলেছে পুজো কার্নিভাল
মঙ্গলবার বিধানসভায় নিজের দফতরে এসেছিলেন শাসকপক্ষের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ। পুজোর পর অধিবেশন হচ্ছে ধরে নিয়েই নিজের দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে সে বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। সঙ্গে বিধানসভা খুললেই যাতে অধিবেশনের কাজকর্ম করতে অসুবিধা না হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে যান তিনি। পুজোর ছুটির পর ৩০ অক্টোবর সোমবার সরকারি অফিস খুলবে। বিধানসভা সূত্রে খবর, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই এক দিনের অধিবেশন হতে পারে।
পুজোর মুখে সোমবার বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল বিধানসভায়। জল্পনা ছিল, মন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সোমবার বিলটি পেশও হয়েছিল। কিন্তু আলোচনা হয়নি। শেষ পর্যন্ত শোকপ্রস্তাব পাঠ করেই মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, যে কোনও লেনদেন সংক্রান্ত আর্থিক বিল বিধানসভায় পাশ করতে গেলে রাজ্যপালের অনুমোদন আবশ্যিক বিষয়। এ ক্ষেত্রে যে দুটি বিল পাশ করাতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার, তার কোনওটিতেই অনুমোদন দেননি রাজ্যপাল। তাই শোকপ্রস্তাবের পর অধিবেশন মুলতুবি হয়ে গেলে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে এবং বাইরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। তাঁদের অভিযোগ, অনৈতিক ভাবে রাজ্য সরকার সেই বিল বিধানসভায় পেশ করেছে।
কিন্তু সেই দাবি মানতে চাননি অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পিকার দাবি করেছিলেন, বিল পাশ হওয়ার আগে রাজ্যপাল অনুমোদন দিলেই চলবে। এ ক্ষেত্রে বিল পেশ এবং তার উপর আলোচনার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কিন্তু যে হেতু প্রাক্তন বিধায়ক মারা গিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব হওয়াতেই অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে। দু’টি বিল নিয়ে আলোচনা হবে ৪ ডিসেম্বর।
কিন্তু মঙ্গলবার রাজভবন থেকে ফাইল রাজ্যপালের অনুমোদন দিয়ে পাঠানো হয়েছে নবান্নে। তাই একদিনের অধিবেশন করতে আর রাজ্য সরকারের কোনও আপত্তি নেই। তাই পুজোর ছুটির পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই একদিনের অধিবেশন ডেকে জোড়া বিল পাশ করানো হতে পারে। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধি করতে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্যালারিজ় অ্যান্ড অ্যালায়েন্স অ্যাক্ট ১৯৫২’ ও বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করতে ‘বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি (মেম্বারস এমোলিউমেন্ট) অ্যাক্ট ১৯৩৭’ সংশোধন করা হবে। এই বিল দু’টি পাশ হলেই ৪০ হাজার টাকা করে বেশি বেতন পাবেন মন্ত্রী-বিধায়করা। প্রসঙ্গত, ৭ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রী ও বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিলেন বিধানসভাতেই।