১০০ দিনের বকেয়া টাকা সহ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলে রাজধানীতে তৃণমূলের দু-দিনের কর্মসূচিতে আজ দ্বিতীয় দিন। সকাল থেকে দিল্লির যন্তরমন্তরের সামনে চলছে ধর্ণা। আর সেই আবহেই, দিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতরে জোড়াফুল শিবরকে তীব্র আক্রমণ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। যে ১০০ দিনের কাজ, আবাস এবং সড়ক যোজনার বকেয়া টাকার দাবিতে ধর্না তৃণমূলের, তাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন শুভেন্দু।
আরও পড়ুনঃ কানাডার ৪১ জন কুটনৈতিককে দেশে ফেরানোর নির্দেশ, অন্যথায় হারাবেন রক্ষাকবচ
দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে যন্তরমন্তরে অবস্থান করছে তৃণমূল। বঞ্চিতদের থেকে পাওয়া চিঠির পাহাড় নিয়ে মঞ্চে রয়েছেন দলের নেতা-নেত্রীরা। সেখান থেকে বিকেলে কৃষিভবনও রওনা দেবেন তাঁরা। আর সেইসময়ই দিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন শুভেন্দু।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের আগে হারিয়ে যাওয়া জনসমনর্থন ফিরে পেতে এই নাটক করছে তৃণমূল। দিল্লিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি করছে। আঞ্চলিক দল তৃণমূল দেশের রাজধানীতে মিথ্যা দাবি নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি করছে। জাতীয় স্তরে ওদের এই আন্দোলনের কোনও প্রভাব পড়েনি। প্রভাব পড়েনি পশ্চিমবঙ্গেও। মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে।”
তৃণমূলকে আক্রমণ করে শুভেন্দু আরও বলেন, “তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে প্রশাসনিক প্রধানদের আঁতাঁতে এই দুর্নীতি হয়েছে। অধিকাংশ টাকা তৃণমূল নেতাদের পকেটে ঢুকেছে। সব রাজ্যের মতো, পশ্চিমবঙ্গেও আবাস যোজনার টাকা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় অসংখ্য ভুয়ো নাম রয়েছে। এই ভুয়ো নামের তালিকা আমি কৃষি ও গ্রামন্নোয়ন দফতরে পাঠিয়েছি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ এর সত্য উদঘাটন করেছেন। জানিয়েছেন এই তালিকায় দেওয়া তথ্য় সম্পূর্ণ সত্য। এই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি জেলার ভুয়ো নামের তালিকা আছে। তৃণমূল দিল্লিতে নাটক করছে।”
১০০ দিনের কাজ থেকে আবাস এবং সড়ক যোজনায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব তৃণমূল। রাজীনতির ময়দানে পেরে না উঠে, দরিদ্র মানুষের পরিশ্রমের টাকা আটকে রাখা হয়েছে বলবে দাবি তাদের। কিন্তু এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধেই রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক কারণে পশ্চিমবঙ্গে আয়ুষ্মান ভারত চালু করা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তাই আয়ুষ্মান ভারতের সুযোগ পান না। প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে খাদ্যসাথী করে দিয়েছে। তৃণমূল পরিবারবাদ, তোষণ এবং দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। ভুয়ো জব কার্ড কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।”
শুধু তৃণমূলই নয়, এ রাজ্যের প্রতিপক্ষ দল কংগ্রেস এবং সিপিএম-কেও এদিন কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে সেটিং রয়েছে কংগ্রেস এবং সিপিএম-এর। ২০২৪-ের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী শিবিরের I.N.D.I.A জোটকে ‘ঠগবন্ধন’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে একাধিক বিষয়ে রাজ্যে যে ভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে, তাতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। যদিও এদিন শুভেন্দু দাবি করেন, সিবিআই তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।
এদিন সন্ধেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করবেন শুভেন্দু। বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শাহকে তথ্য দেবেন তিনি। কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর সঙ্গেও বৈঠক রয়েছে। তৃণমূল যেমন কৃষিভবনের উদ্দেশে রওনা দেবে, শুভেন্দুও কৃষি ভবনে গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন সেখানে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে সাধ্বী নিরঞ্জনকে স্মারকলিপি দেবেন।