রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি দিনে দিনে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় রাজ্য জুড়ে বাড়ে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত। তবে করোনার পর থেকে আরও বেশি করে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মশাবাহিত রোগ। এ রাজ্যেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গি মোকাবিলায় তাই বড়সড় উদ্যোগ নিতে চলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং প্যানাসিয়া বায়ো টেক লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে ডেঙ্গির টিকা (Dengue Vaccine) আসতে চলেছে দেশে। দেশজুড়ে ২০টি কেন্দ্রে হবে ভ্যাকসিনের (Dengue Vaccine) ক্লিনিকাল ট্রায়াল। পশ্চিমবঙ্গে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হবে বেলেঘাটা নাইসেডে। ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হবে ডেঙ্গির টিকা।
আরও পড়নঃ ফ্ল্যাট প্রতারণা কাণ্ডে নুসরতের কাছে আরও নথি তলব ইডির
গবেষকরা বলছেন, গত ৫০ বছরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ডেঙ্গি (Dengue) মারাত্মক সংক্রামক রোগ হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গি থেকে জটিল রোগও হচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ডেঙ্গির ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করতে হবে। ডেঙ্গি রুখতে বিশ্বজুড়েই গবেষণা চলছে। কোথাও মশাদের দাপাদাপি থামাতে তাদের শরীরে ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া ঢুকিয়ে মশার বংশ নাশ করার চেষ্টা চলছে, আবার কোথাও মশার জিনেই বদল ঘটানো হচ্ছে। জিন জাদুতে স্ত্রী মশাকে পুরুষ মশায় রূপান্তরিত করার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। আবার মশার জিনে রদবদল করে অ্যান্টিবডি ঢুকিয়ে সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা কমানোর চেষ্টা করছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা। বেশিরভাগ গবেষণাই হচ্ছে জিন নিয়ে। এরই পাশাপাশি ডেঙ্গির টিকা (Dengue Vaccine) তৈরি হয়েছে। তার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হবে।
প্যানাসিয়া বায়ো টেক লিমিটেড ডেঙ্গি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ আগেই শুরু করেছিল। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল আগেই শেষ হয়ে যায়। চলতি বছরে মার্চ-এপ্রিলে তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেই ট্রায়াল শেষ হলে আগেই ডেঙ্গির ভ্যাকসিন চলে আসত দেশে। কিন্তু কিছু জটিলতার কারণে তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটি পিছিয়ে যায়। ভ্যাকসিনে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়। সেই পরিবর্তন শেষ হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে ডেঙ্গি ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে।
ভ্যাপসা গরম ও তাপপ্রবাহের পরে বর্ষার মরশুম এলেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়বে। গবেষকরা বলছেন, টিকা (Dengue Vaccine) এলে এবং ট্রায়াল সফল হলে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচবে। পুণের সেরাম ইনস্টিটিউটও ডেঙ্গির ভ্যাকসিন তৈরি করছে বলে জানা গেছে। সানোফি ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের টিকা ইতিমধ্যে আমেরিকায় ডেঙ্গি মোকাবিলার জন্য অনুমোদন পেয়েছে।