পর্যটনে সেরা পুরস্কার নিয়ে গ্রামে ফিরেই মৃত কিরীটেশ্বরী মন্দিরের সম্পাদক, শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম

পর্যটনে সেরা পুরস্কার নিয়ে গ্রামে ফিরেই মৃত কিরীটেশ্বরী মন্দিরের সম্পাদক, শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম

পর্যটনে ভারত সেরা পুরস্কার পেয়েছে মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী মন্দির। শুক্রবার দুপুরে পুরস্কার নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন বাড়ি। খুশিতে ডগমগ করছে গোটা গ্রাম। পর্যটনে ভারতসেরা গ্রামের পুরস্কার বলে কথা। কিন্তু যিনি কেন্দ্রের কাছ থেকে ওই পুরস্কার নিয়ে এলেন শুক্রবার মাঝরাতেই মৃত্যু হল তাঁর। স্থানীয় সূত্রে খবর, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী মন্দির কমিটির সম্পাদক প্রভাতচন্দ্র দাসের। বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। পেশায় শিক্ষক প্রভাতচন্দ্রের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম।

আরও পড়ুনঃ ‘ভারতকে শত্রু বলতে চাইনি,’ নিজের মন্তব্যের কার্যত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে জানালেন পিসিবি চেয়ারম্যান

ভাগীরথীর পশ্চিম পারে মন্দির অধ্যুষিত একটি গ্রাম কিরীটকণা। সেখানে অন্যতম প্রাচীন মন্দির হল কিরীটেশ্বরী। তাই লোকমুখে এই গ্রামও কিরীটেশ্বরী নামে পরিচিত। কিরীটেশ্বরী মন্দিরের পরিচালন কমিটিতেও রয়েছেন একাধিক মুসলিম সদস্য। এমন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য এই গ্রামের মুকুটে এসেছে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা। ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের তরফ থেকে মেলে ‘বেস্ট ট্যুরিজ়ম ভিলেজ অফ ইন্ডিয়া’ খেতাব। দেশের ৭৯৫টি আবেদনের মধ্য থেকে ভারত সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নেয় মুর্শিদাবাদের এই প্রান্তিক গ্রাম।

 

গত ২১ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে সমাজমাধ্যমে ওই গ্রামবাসীকে শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। তিনি লেখেন, ”মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী গ্রাম দেশের সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আগামী ২৭ তারিখ দিল্লি থেকে পুরস্কার প্রদান করা হবে।” ওই পুরস্কার নিতে সোমবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন কিরীটেশ্বরী মন্দির কমিটির সম্পাদক প্রভাতচন্দ্র। বুধবার মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে পর্যটন মন্ত্রকের দেওয়া সেরা পর্যটন গ্রামের খেতাব গ্রহণ করেন তিনি। আনুষ্ঠানিক পর্ব সেরে শুক্রবার দুপুরে দিল্লি থেকে গ্রামে পৌঁছোন প্রভাতচন্দ্র।

 

ওই শিক্ষকের পরিবার সূত্রে খবর, বাড়ি ফিরে কোনও শারীরিক অসুস্থতা না থাকলেও দীর্ঘ ট্রেনযাত্রা ধকলে খানিকটা দুর্বল বোধ করছিলেন উনি। তবে শুক্রবার রাত্রি ১২টা নাগাদ হঠাত্‍ শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে শুরু করেন কিরীটেশ্বরী মন্দিরের সম্পাদক। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় পরিবার। হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথেই রাত ১টা ৪৫ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে পরিবার।

 

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, মুকুন্দবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন প্রভাতচন্দ্র। পাশাপাশি, প্রাচীন মন্দিরের সম্পাদকের ভার ছিল তাঁর উপর। মৃতের ভাই বাপি দাসের কথায়, ”সেরা পর্যটন গ্রামের স্বীকৃতির খবর ঘোষণার পর থেকে ভীষণ উত্তেজিত ছিল দাদা। পুরস্কার নিয়ে দিল্লি থেকে ফিরে এসে গ্রাম নিয়ে অনেক পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল দাদা। রাতে শুতে যাওয়ার সময় বলল, বুকে সামান্য ব্যথা অনুভব করছে। মধ্যরাতে হঠাত্‍ শ্বাসকষ্ট শুরু হল দাদার। হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার সময়টুকু পেলাম না আমরা।”

en.wikipedia.org