আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জীকে তলব করেছে ইডি। আবার আগামীকালই ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক। এই আবহে এটাকে বিজেপির ষড়যন্ত্র বলছে তৃণমূল। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শশী পাঁজা জানান, একুশের বিধানসভা ভোটে জেতা ধূপগুড়ি বিধানসভা উপ নির্বাচনে ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। ধূপগুড়ির ভোটে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাই ধূপগুড়ির হারের রাগ থেকেই ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের দিনই ফের অভিষেককে ইডির তলব বলেই দাবি তৃণমূলের। তাঁদের বক্তব্য, ‘ধূপগুড়ির সিটটা ছিল বিজেপির। বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। এই হারটা সহ্য করতে না পারার জন্যই অভিষেকের ওপর রাগ।’
এই প্রসঙ্গেই একদা তৃণমূলের নেতা, বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন পার্থ ভৌমিক। তাঁর দাবি, ‘আসলে অভিষেকের শিরদাঁড়া সোজা, শুভেন্দুর মতো শিরদাঁড়া বিক্রি করেননি. সেকারণেই বারেবারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওঁকে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির দিনগুলোতে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ডেকে বিব্রত করার চেষ্টা হচ্ছে।’
আরও পড়ুনঃ ঝালদা-রানিনগর আবহে এবার অধীরকে খোঁচা ফিরহাদের
সর্বভারতীয়স্তরে বিজেপিকে ঠেকাতে গঠিত হয়েছে ইন্ডিয়া জোট। জোটের কমিটির অন্যতম সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বুধবার দিল্লিতে জোটের বৈঠকে যোগ দেবেন না অভিষেক। পরিবর্তে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হবেন তিনি। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে সেই ইঙ্গিত দিয়ে পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘উনি (অভিষেক) তদন্তের মুখোমুখি হতে ভয় পান না। সেটা আগামীকাল আবারও প্রমাণ হয়ে যাবে।’
এই প্রসঙ্গেই ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্তাদের মেরুদন্ড সোজা রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন পার্থ। তৃণমূল নেতার কথায়, ‘ইডি, সিবিআই কর্তাদের বলছি, খামোখা নিজেদের আত্মসম্মান ক্ষুণ্ণ হতে দিচ্ছেন কেন? আর তো ৬ মাস, তারপর তো ভোট!’ একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের প্রতি তাঁর অনুরোধ, ‘এভাবে ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’র নামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রকে ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করবেন না।’
তৃণমূল নেতৃত্বর দাবি, ২০২২ সালে অভিষেকের নেতৃত্বে টিএমসিপির সমাবেশ রাজনৈতিক মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। এমনকী গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে অভিষেকের নেতৃত্বে নবজোয়ার কার্যত জনজোয়ারে পরিণত হয়। তারপর থেকেই অভিষেককে টার্গেট করেছে বিজেপি। সেকারণেই অভিষেকের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এজেন্ডার সময়ই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অভিষেক একা নন, তাঁর স্ত্রী, পুত্রকেও বিজেপি হয়রানির হাত থেকে রেহাই দিচ্ছে না বলে এদিন অভিযোগ করেছেন পার্থ।
জি-২০ সম্মেলনের প্রসঙ্গ টেনে শশী পাঁজা বলেন, ‘জি-২০ সম্মেলনের জন্য বাজেটে ৯৯০ কোটি বরাদ্দ ছিল, অথচ ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হল। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ নষ্টের জবাব দেবে কে? এতে ভারতের কী শিল্পোন্নতি হল? বাংলার বাড়ি প্রকল্প, ১০০ দিনের কাজের বেলায় টাকা নেই, অথচ এসবে খরচ করার টাকা আছে! বিজেপি এভাবে যত বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করবে ধূপগুড়ির মতো প্রতিটা ভোটে বাংলার মানুষ তার জবাব ফিরিয়ে দেবে।’