বোমা ফাটালেন সোনালি, ‘অভিষেকের নির্দেশেই ২০১৮ পঞ্চায়েতে অবাধ ছাপ্পা-সন্ত্রাস’, বাংলার রাজনীতিতে তাঁর প্রথম পরিচয় ছিল তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের ‘ছায়াসঙ্গী’। সেখান থেকে বিধায়ক, পরবর্তীতে ডেপুটি স্পিকার। শুরুটা সেই বাম আমল থেকে। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতার আশেপাশে সর্বদাই বিরাজমান কুপালে বড় টিপ পরা এই ‘জাঁদরেল’ মহিলা। তৃণমূল বিধায়কদের বিধানসভা ভাঙচুর হোক বা থানায় ঢুকে ওসিকে শাঁসানো, টিম মমতার প্রথম একাদশে সবসময়ই জায়গা করে নিয়েছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক সোনালি গুহ।
তিনি এখন প্রাক্তন। কারণ ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। অভিমানে বিজেপিতে যোগ দিলেও ফল বেরনোর পর ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ‘নতুন তৃণমূল’-এ স্থান হয়নি একদা মমতা ঘনিষ্ঠ এই নেত্রীর। মনস্থির করেন, অদৃষ্টের লিখন মেনে তিনি বিজেপিই করবেন। সম্প্রতি একের পর এক ইস্যুতে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ ফের সংবাদে শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে সাতগাছিয়ায় প্রাক্তন। দিয়েছেন ‘আগ্নেয়গিরি’ বিস্ফোরণের হুমকিও।
সোনালির অভিযোগ, ‘২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় ভোটের কাজের জন্য আমি গাড়ি চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাকে তা দেওয়া হয়নি। করোনার সময় অভিষেক যে কল্পতরু রান্নাঘর থেকে মানুষকে খাবার দিয়েছেন, তার ব্যবস্থাও উনি নিজে করেননি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখের স্বামী রমজান শেখ গোটা খরচটা জুগিয়েছেন, নাম হয়েছে অভিষেকের। যদিও এখন কেউ এটা স্বীকার করবেন না। ইদের সময় সংখ্যালঘু এলাকাতেও অভিষেক যেতেন না। কিন্তু এখন রেড রোডে ইদের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে তাঁকে দেখা যায়। এই নিয়ে যত কম বলা যায়, তত ভালো’
পাশাপাশি সোনালিই এদিন ফের বোমা ফাটালেন। তাও কখন? যখন পঞ্চায়েতে নির্বাচনে মানুষের মতামত নিয়ে প্রার্থী ঠিক করতে জেলায় জেলায় ঘুরছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের মুখে যখন বারবার অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা শোনা যাচ্ছে, তখন ২০১৮-র পঞ্চায়েতে সন্ত্রাস ও ভোট লুঠের জন্য অভিষেকের দিকেই আঙুল তুললেন সোনালি। তিনি একটি সংবাদমাধ্যমেকে বলেন ‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিরোধীদের কোথাও মনোনয়ন জমা দিতে দেননি অভিষেক। আমাকে তিনি বলেছিলেন, সোনালি পিসি আমি পঞ্চায়েত ভোটের দিন কোনও গণ্ডগোল করব না। কিন্তু, বিরোধীরা যাতে মনোনয়ন দিতে না পারে তার বন্দোবস্ত করব।’
আরও পড়ুন – হেলমেট পড়তে চাইছে না মোটরবাইক চালকরা। তার চেয়ে জরিমানা দিতে রাজি তারা
অভিষেককে তখন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তৃণমূল সাংসদ তাঁর কোনও কথা শোনেননি বলেই দাবি সোনালির। মমতার প্রাক্তন ছায়াসঙ্গীর কথায়, ‘বিরোধীরা যাতে নমিনেশন দিতে না পারে, সেই কারণে জেলাশাসকের অফিসে তৃণমূলকর্মীদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এটা অভিষেকের নির্দেশেই হয়েছিল। একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আরেকদিকে অনুব্রত মণ্ডল। দু’জনেই এক কাজ করেছেন। অনুব্রত এখন তিহাড়ে, অভিষেককেও সেখানে যেতে হবে।’