
বন্যার জলের মতো ঢুকে রাতারাতি আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালিবান। ফিরেছে দু’দশক আগের অন্ধকারময় স্মৃতি। আর তাই প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়তে চাইছেন আফগানরা। প্রাণ বাঁচানোর আকুতি নিয়ে প্রতিদিন কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Kabul Airport) জড়ো হচ্ছেন বহু আফগান নাগরিক। পেটে খাবার নেই। তেষ্টা মেটানোর জলও নেই।
কাবুল বিমানবন্দরে (Kabul Airport) যে কী ভয়াবহ পরিস্থিতি, তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন এক মহিলা। চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন দেশ ছাড়তে চাওয়া আফগান নাগরিকরা। এক আফগান নাগরিক জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের অবস্থা শোচনীয়। ভিড়ে থিকথিক করছে। খাবার নেই। পানীয় জল নেই । প্রতি মুহূর্তে প্রাণের ভয়। বিমানবন্দরে এক বোতল জল কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৪০ মার্কিন ডলার। ভারতীয় অঙ্কে যার মূল্য ৩০০০ টাকা। এক প্লেট ভাতের দাম পড়ছে ১০০ মার্কিন ডলার বা ৭৫০০ টাকা।
আর ও পড়ুন তালিবানকে আসলে মদত দিয়েছে পাকিস্তানই, স্বীকার করলো জাবিউল্লা মুজাহিদ (Jabiullah Mujahid)
বিমানবন্দরে (Kabul Airport) চলবে না আফগান মুদ্রা। বদলে নগদে মার্কিন ডলারে টাকা মেটাতে হচ্ছে। যার জেরে আরও সমস্যায় পড়েছেন আফগান নাগরিকরা। সবমিলিয়ে ভয়াবহ অবস্থা হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তবে শুধু বিমানবন্দর নয়। গোটা আফগানিস্তান জ্বলছে খিদের জ্বালায়।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, প্রতি দু’জন আফগানবাসীর মধ্যে একজন অভুক্ত। অর্থাৎ কাবুলিওয়ালার দেশে প্রায় দেড় কোটি মানুষ এই মুহূর্তে খাবার পাচ্ছেন না। সে দেশে ২০ লক্ষ শিশু ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার। তাদের কাছে দ্রুত খাবার পৌঁছে দেওয়া দরকার। কিন্তু কারা পৌঁছে দেবে খাবার? কারা তালিবানের রক্তচক্ষু এড়িয়ে যাবে? সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, শিশুদের তেষ্টা মেটাতে এগিয়ে এসেছেন সেনা জওয়ানরা।
তাঁরা নিজেদের পানীয় জল দিয়ে শিশুদের তেষ্টা নিবারণের চেষ্টা করছেন। বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরণের পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। নিরাপত্তা আঁটসাঁট করেছে ন্যাটো গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি। তবু বিমানবন্দরে ভিড় কমছে না। এক ব্রিটিশ সেনা জওয়ান জানাচ্ছেন, “মার্কিন পাসপোর্ট ভিসা রয়েছে এমন প্রায় দেড় হাজার জন বিমানবন্দরের বাইরে আটকে রয়েছেন। আফগান নাগরিকদের উদ্ধারের পাশাপাশি তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াও আমাদের কর্তব্য বলে মনে করছি। কিন্তু কীভাবে কী হবে জানি না।