সুখবর, উৎসবের আগে হকারদের ঋণ দিচ্ছে সরকার। জানুন কী ভাবে আবেদন করবেন… সামনেই পুজো। আর পুজো মানেই বিশাল পশরা সাজিয়ে বসার সুযোগ কলকাতার হকারদের। তাঁদের জন্যই এবার বিশেষ উদ্যোগ রাজ্য সরকারের। হকারদের পাশে দাঁড়াতে উৎসবের মরশুমে ঋণের প্রকল্প নিয়ে এল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কী ভাবে মিলবে সেই ঋণ? কত টাকা ঋণ পাবেন হকাররা?
এই প্রকল্পে প্রথম দফায় হকারদের দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা। সেই টাকা শোধ করলে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া হবে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ। এই ঋণ শোধের সর্বোচ্চ সময়সীমা এক বছর। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করলে হকাররা পাবেন আরও ৫০ হাজার টাকা। ব্যাঙ্ক থেকেই এই ঋণ পাবেন হকাররা। তবে মূলত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি থেকেই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি ব্যাঙ্কও যাতে ঋণ দেয়, তার জন্য সরকারি স্তরে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে খবর। তাদের নির্ধারিত সুদের হারের উপর ৭ শতাংশ ছাড় পাবেন হকাররা। এই ঋণ নেওয়ার জন্য নিজ নিজ পুরসভায় গিয়ে আবেদন করতে পারবেন হকাররা।
এই ঋণ পেতে ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় মোট ৭৫ হাজার ২৭২টি আবেদন জমা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে নবান্ন সূত্রে। এর মধ্যে ৪৬ হাজার ৫৬৯টি আবেদন অনুমোদিত হয়ে গিয়েছে। ৩৫ হাজার ৩৩৮ জন হকার ইতিমধ্যে ঋণ পেয়েও গিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে এই খাতে এখনও পর্যন্ত দেওয়া ঋণের পরিমাণ মোট ৩৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ব্যাঙ্ক ৫২ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে।
নবান্ন সূত্রে আরও খবর, গ্রামীণ এলাকার কোনও বাসিন্দা পুর এলাকায় হকারি করলে তিনিও এই সুবিধা পাবেন। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত বর্ধমান পুরসভায় সবেচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্যারাকপুর মহকুমার একাধিক পুরসভা। প্রত্যেক পুরসভায় এই প্রকল্পের জন্য একজন করে নোডাল অফিসার রয়েছেন। পুজোর আগে হকাররা এই টাকা পেলে ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রভূত সুবিধা হবে বলে আশাবাদী সরকারি কর্তারা।
জানা গিয়েছে, পুর দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “আমাদের লক্ষ্য অধিক সংখ্যক হকারকে এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া। তার জন্য সবক’টি পুরসভাকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।” সাধারণত, বড় ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনও সমস্যা হয় না। তুলনামূলক ছোট ব্যবসায়ী ক্ষেত্রে এই বিষয়টা অনেকটাই দীর্ঘমেয়াদী। হকাররা আগে তেমনভাবে এই সুবিধা কখনও পায়নি। তাঁদের ব্যবসা বাড়াবার জন্য ব্যাঙ্ক ঋণ পাইয়ে দেওয়ার সরকারি উদ্যোগ ইতিপূর্বে খুব একটা দেখা যায়নি। তাই এই প্রকল্প পুজোর আগে তাঁদের যে অনেকটাই লাভবান করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন – এবার তদন্তকারীদের নজরে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া শিক্ষকরা? প্রাথমিক শিক্ষকদের বয়ান রেকর্ড CBI-এর,
দুর্গাপুজোর আগে একটু লাভের আশায় নানা পণ্যসামগ্রী পাইকারি দরে কেনেন হকাররা। কিন্তু, অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় মূলধনের অভাবে অনেকেই ব্যবসা বাড়াতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে তাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে তিন দফায় মোট ৮০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, রাজ্যের সমস্ত পুরসভা এলাকার হকাররা এই সুযোগ পাবেন।