ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার আতঙ্কের মধ্যে রায়গঞ্জে বাড়ছে স্ক্রাব টাইফাস রোগীর সংখ্যা, বর্ষার মরশুম শুরু হতেই রাজ্যের পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুরেও দেখা দিয়েছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিবারই এই সময় ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ে। যার জেরে এবারেও রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু এর পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুর জেলায় বাড়ছে ‘স্ক্রাব টাইফাস’ রোগের প্রকোপ। এই কারণে জেলাজুড়ে রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগও।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত একমাসে জেলায় রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর মহকুমা মিলিয়ে ৪৬ জন ‘স্ক্রাব টাইফাস’-এ আক্রান্ত হয়েছেন।এর মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত গত ৪৮ ঘণ্টায় ১১ জনের শরীরে ওই রোগের সংক্রমণ মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে,স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল-সহ জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে জ্বর,শ্বাসকষ্ট ও পেটের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা করাতে যাওয়া রোগীদের ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার পাশাপাশি ‘স্ক্রাব টাইফাস’ রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা বাড়ানো হয়েছে।
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’এসময় জ্বর একটু বেশী হয়।তবে অন্যান্য জেলার তুলনায় এ জেলায় রোগীর সংখ্যা কম। আপাতত হাসপাতালে ১ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে রয়েছেন,তিনি সুস্থ। এছাড়াও ২৬ জন স্ক্রাব টাইফাস পজিটিভ রোগী হাসপাতালে রয়েছেন।গত ২ দিনে নতুন করে এমন কোনও রোগীর হদিশ মেলেনি।চিকিৎসা চলছে।চিন্তার কোনো বিষয় নেই’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়োছে,মূলত,বর্ষাকালে মশার কামড়ে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া এবং পোকার কামড়ে ‘স্ক্রাব টাইফাস’ রোগের প্রকোপ বাড়ে।তাই,দফতরের তরফে প্রশাসনিক সহযোগিতায় জেলার নয়টি ব্লকে মশা ও পোকার বংশবিস্তার রুখতে আবর্জনা সাফাই,জমা জল পরিস্কার-সহ বাসিন্দাদের নানাভাবে সচেতন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন – লকআপে থাকাকালীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ রণক্ষেত্র মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম
রোগী ও তাঁদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্কও রয়েছে।সুবীর বর্মণ নামের এক রোগীর আত্মীয় বলেন,’ওয়ার্ডে ক্রমশই বাড়ছে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা।জ্বরের পাশাপাশি গা,হাত পা ব্যাথাও রয়েছে। এই পরিস্থিতি চিকিৎসা চলছে।’অন্যদিকে অপর এক রোগীর আত্মীয় পঙ্কজ বর্ধন বলেন,’আমার দাদা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।ওয়ার্ডে প্রচুর রোগীর চাপ বাড়ছে। ফলে বেড পাওয়া মুশকিল।মেঝেতে কিংবা বারান্দায় রাখা হচ্ছে রোগীদের। বেশিরভাগই ডেঙ্গি,ম্যালেরিয়া কিংবা স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে আমাদের উদ্বেগ বাড়ছে,একই সঙ্গে আমরা আতঙ্কিতও হয়ে পড়ছি।’