এক নজিরবিহীন ছবি ,বিধানসভায় মুখোমুখি নওশাদ-সওকত, ‘ভয়ঙ্কর ভাঙড়’ নিয়ে কী বার্তা দিলেন, বিধানসভার অলিন্দে এ এক নজিরবিহীন ছবি। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা সওকত মোল্লা ও ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। একে অপরকে সম্বোধন করলেন ‘ছোট ভাই’, ‘বড় ভাই’ বলে। দারুণ খোশ মেজাজে দু’জনই। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা দিলেন, ভোট হবে শান্তিপূর্ণভাবেই। মনোনয়নপর্ব থেকে যে ভাঙড় শিরোনামে, বোমা, গুলি, রক্তের রাজনীতিতে নাম তুলেছে যে ভাঙড়, সেই ভাঙড়েরই দুই নেতা সোমবার একেবারে অন্য মেজাজে ধরা দিলেন। সৌজন্যের নজির দেখালেন তাঁরা। দু’জনই বললেন, “আমরা বিধায়ক, সহকর্মী। এতে অসুবিধা কোথায়?”
বিধানসভার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন নওশাদ। ভিতর থেকে তখন বেরিয়ে এলেন সওকত মোল্লা। নওশাদ হাসছে, হাসছেন সওকতও। হঠাৎই মাঝে এলেন একদল সাংবাদিক। ভাঙড়ের দুই যুযুধান নেতাকে তখন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে। সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের আগেই নওশাদ সিদ্দিকি বলতে শুরু করলেন, “আমি ক্যামেরার সামনেই বলছি, আমাকে ১ নম্বরটায় ডিস্টার্ব একটু কম করবেন।” পাশে দাঁড়িয়ে হাসছেন সওকত মোল্লা।
এরপরই নওশাদ বলেন, “আমার থেকে বেশি সময়ের বিধায়ক উনি। আশা করব উনি আমাকে গাইড করবেন। নির্বাচনী ক্ষেত্রে এলাকায় যাতে সুষ্ঠুভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়।” নওশাদের দাবি শুনে কথা দিলেন সওকতও। বললেন, “নিশ্চিতভাবে গণতান্ত্রিক পথেই নির্বাচন হবে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। আমার ছোট ভাই, নওশাদভাইকে বলব গন্ডগোলটা একটু কম করতে।”
সওকত মোল্লার একেবারে পাশে দাঁড়িয়ে নওশাদের এমন ‘বাইরে থেকে লোক আনার’ অভিযোগ, জবাব যে দিতেই হতো ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ককে। সওকত বললেন, তাঁদের যথেষ্ট কর্মী সমর্থক রয়েছে দলে। বাইরে থেকে লোক আনার দরকারই নেই।
সওকত-নওশাদের গলায় শোনা যায় একই সুর, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভোট হবে শান্তিপূর্ণই। সকলে তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টাও করবেন বলে জানান তাঁরা। কিছুটা এগিয়ে এসেই সওকতের প্রতিশ্রুতি, “নওশাদ ভাই সৌজন্য দেখালে আমিও সৌজন্য দেখাবই।” এরপরই সংযোজন, “উনি না রাখলেও করব। আমি তো বলেই দিয়েছি শান্তিপূর্ণ ভোট হবেই এবার।”
আরও পড়ুন – সরকারি চাকুরিজীবীদের বেতন বাড়ছে, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর। ৮ বছর পর বাড়তে চলেছে বেতন
অন্যদিকে কৌশলী সুর নওশাদের গলায়। বললেন, “বড় দাদাই জানেন। বাইরে থেকে কোথায় কী লোক আসছে না আসছে। ওনাদের পুলিশ থেকে শুরু করে সব কিছু আছে। যদি আমাদের কেউ গন্ডগোল করে থাকে নিশ্চয়ই দেখে নেবে। বড় দাদা যদি চায় ছোট ভাইকে গাইড করে শান্তিপূর্ণ ভোট করাতেই পারেন। ভাঙড়ের মানুষ যথেষ্ট শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট দেন। মানুষ যা রায় দেবেন মাথা পেতে নেব।”