রেশন দুর্নীতি কান্ডে শুক্রবার ভোররাতে নিজের সল্টলেকের আবাসন থেকে ইডি গ্রেফতার করে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ইডির হাতে গ্রেফতার হতেই এক্স হ্যান্ডেল (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে শাসক তৃণমূলকে তীব্র খোঁচা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা শুভেন্দুকে বিঁধে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লিখলেন, ”সবাই জানি, আপনারই জেলে বসে থাকা উচিত ছিল।”
আরও পড়ুনঃ প্রয়াত পরেশ অধিকারীর পুত্র হীরকজ্যোতি অধিকারী
শুভেন্দু তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে নাম-সহ একটি তালিকার পোস্টার পোস্ট করেন। সেখানে ২০২২ সালের জুলাই মাসের ২৩ তারিখ গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মানিক ভট্টাচার্য, জীবনকৃষ্ণ সাহা এবং জ্যোতিপ্রিয়ের উল্লেখ রয়েছে। সেই সঙ্গে বিরোধী দলনেতা লেখেন, ”এর পর হয়তো মন্ত্রিসভার বৈঠক এবং বিধানসভার অধিবেশন জেলের মধ্যে ডাকতে হবে।”
শুভেন্দুর সেই পোস্টকে উল্লেখ করে কুণাল লেখেন, ”শুভেন্দু, আপনি আপনার দলের ওয়াশিং মেশিন রাজনীতির জন্য আজকে নিরাপদে রয়েছেন। খাঁচার কুকুর ইডি এবং সিবিআইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বিরোধী নেতাদের উপর। বিজেপি প্রমাণ করে দিয়েছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। নইলে আমরা সবাই জানি, আপনারও জেলে বসে থাকা উচিত ছিল। তা হলে আর এ সব মিম পোস্ট করতে পারতেন না।”
এখানেই থামেননি কুণাল। সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সিবিআইকে যে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, সেই চিঠির প্রতিলিপিও পৃথক পোস্টে দেন কুণাল। দাবি জানান, অবিলম্বে শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হোক। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উদ্দেশে কুণালের প্রশ্ন, ”এই বেলা আপনারা নীরব কেন?”
শুভেন্দু পাল্টা ইডির উদ্দেশে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, রেশন দুর্নীতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হোক। প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। কিন্তু মমতা তাঁর তৃতীয় মেয়াদে জ্যোতিপ্রিয়ের দফতর বদলে দেন। মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষকে খাদ্য দফতরের দায়িত্ব দিয়ে জ্যোতিপ্রিয়কে বন দফতরের দায়িত্ব দেন। শুভেন্দুর অভিযোগ, ১০ বছরে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে বাঁচাতেই জ্যোতিপ্রিয়ের দফতর বদল করেছিলেন।
তৃণমূলের বক্তব্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে যখন তল্লাশি চলছে তখন, কালীঘাটের বাড়ি থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কাক-পাখি ডাকার আগেই রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে ইডি। তার পর এক্স হ্যান্ডেলে বাগ্যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল শাসক-বিরোধী নেতাদের।