জোরকদমে চলছে রায়গঞ্জ বাইপাসের কাজ। বাড়তি জনসংখ্যার কারণে রায়গঞ্জ শহরে বেড়েছে যানযন্ত্রণা। দুই লেনের পুরোনো ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বেশি সংখ্যক বাস, লরি, ছোট গাড়িতে বর্তমান চলতি রায়গঞ্জ বাইপাসে এখন চলাফেরা করাই দুঃসহ। নিয়মিতই ঘটছে নানা ঘটনা, দুর্ঘটনা। এরকম পরিস্থিতিতে জানা গেল, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চালু হতে চলেছে রায়গঞ্জ শহরের পশ্চিম সীমানা ঘেঁষে ৪ লেনের রায়গঞ্জ বাইপাস। সড়কের কাজ প্রায় শেষ।
রেললাইনের ওপরে সবমিলিয়ে ১কিলোমিটারের কাজ শেষ হলেই এই সড়ক খুলে দেওয়া হবে জনগনের ব্যবহারের জন্য, এমনটাই জানালেন সড়কের কাজে যুক্ত একাধিক ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়াররা।
রূপাহারের বাসিন্দা তথা সমাজকর্মী মানস চন্দ জানান, ২০১২ সালে কাজ শুরুর বোর্ড লাগানো হয়। তখন খরচ ধরা হয়েছিল ১১০০ কোটি টাকা। এরপর কাজ শুরুর সময় ২০১৮ সালে সেই পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫০০কোটি টাকা। রূপাহার থেকে বারোদুয়ারী পর্যন্ত জাতীয় সড়কের বাইপাস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালে।
প্রায় ১২ কিমি দীর্ঘ এই বাইপাস নির্মাণ হয়ে গেলে রায়গঞ্জ শহরের যানজট কমবে এবং রূপাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত মোট ৪৫ কিমি রাস্তা চারটি লেনে সম্প্রসারিত হবে। কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। এদিন সুভাসগঞ্জের দিক দিয়ে বাইপাসের ফ্লাই এ্যাশ সরিয়ে, কাদা, ধুলো মেখে যখন প্যানেলের ওপরে ওঠা গেলো, তখন আমাদের প্রতিনিধি দেখলেন পরপর প্যানেল বসিয়ে কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। কাজের তৎপরতা নিয়ে কাজের ঠিকাদার প্রিন্স কুমার সিং বলেন, আমরা আগামী ফেব্রুয়ারী মাস বা মার্চ মাসের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করে দিতে পারব।
তারপর হাইওয়ে রাস্তা তৈরি করবে। ইতিমধ্যেই এসে পৌছেছে বড় বড় লোহার পাত। যেগুলো বসবে রেললাইনের ওপরে। চলছে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ। ইঞ্জিনিয়ার অঙ্কিত দ্বীবেদী বলেন, আমরা ২০ জন মত শ্রমিক, মিস্তিরি মিলে শেষ ১ কিলোমিটারের কাজ করছি। অল্প কাজই বাকি আছে। খুব শিগগিরই শেষ হবে।
আরও পড়ুন – গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঢেঁকি
রূপাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত মোট ৪৫ কিমি রাস্তা চারটি লেনের রাস্তা সম্পূর্ণ হলে এই এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টে যাবে বলেই বিশ্বাস স্থানীয়দের। তাই তারা অবসর সময় পেলেই চলে আসেন কাজের গতি ও কাজ দেখতে। এদিন কাজ দেখতে এসেছিলেন বাসুদেবপুরের গনেশ রায়। তিনি বলেন, আমরা ভীষণ আশাবাদী এই রাস্তা নিয়ে। প্রায়দিনই কাজ দেখতে চলে আসি। আশা করছি, এই রাস্তা আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে সাহায্য করবে। এই ৪ লেনের বাইপাস একদিকে যেমন রায়গঞ্জ শহরের যানজট কমিয়ে দেবে,তেমনি শহরের দূরবর্তী এই গ্রামীণ এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করবে বলেই বিশ্বাস অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।