‘সফল অপরাধী, কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা’, যাদবপুরকাণ্ডে ধৃতদের কোর্টে তুলতেই গর্জে উঠলেন সরকারি আইনজীবী। যাদবপুরকাণ্ডে (Jadavpur University Student Death) শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে তিন পড়ুয়াকে। এর মধ্যে দু’জন প্রাক্তনী ও এক বর্তমান পড়ুয়া রয়েছেন। এদিনই ধৃতদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়। প্রত্য়েককেই আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, তদন্তের শুরু থেকেই ধৃতরা পুলিশকে ভুলপথে চালিত করার চেষ্টা করেছেন। ঘটনার দিন প্রত্যেকেই ঘটনাস্থলে ছিলেন। তারপর পরিকল্পনা করে বাড়িও চলে গিয়েছিলেন। মিথ্যা বয়ান দিয়ে তদন্তকে প্রভাবিত করেছেন। শুধু এই তিনজন নয়, গ্রেফতার হওয়া বাকি ৯ পড়ুয়াও করেছেন এই কাজ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকেই যুক্ত থাকতে পারে। ধৃতদের জেরা করে তাঁদেরই নাগাল পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে প্রথমবর্ষের ছাত্রের ঠিক কীভাবে মৃত্যু হল, অর্থাৎ সে নিজে পড়ে গেল নাকি কেউ তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিল তাও বোঝার চেষ্টা করছে পুলিশ। যদিও সরকারি আইনজীবীর সাফ দাবি, এটা পুরোটাই সংগঠিত অপরাধ। আগে থেকে প্ল্যান করেই সবটা করা হয়েছে। এমনকী পরবর্তীতে পুলিশি জেরার মুখোমুখি হলে তাঁরা কী বয়ান দেবে তাও একসঙ্গে বসে ঠিক করেছিল ধৃতেরা। প্রসঙ্গত, যাদবপুরকাণ্ডে ১১ অগস্ট গ্রেফতার করা হয় সৌরভ চৌধুরীকে। সে যাদবপুরের প্রাক্তনী। ১৩ অগস্ট গ্রেফতার হয় দীপশেখর দত্ত, মনোতোষ ঘোষ। দুজনেই বর্তমান পড়ুয়া। এরপর ১৬ অগস্ট গ্রেফতার হয় সপ্তক কামিল্যা, অসিত সর্দার, মহম্মদ আরিফ, সুমন নস্কর, অঙ্কন সর্দার, মহম্মদ আসিফ আজমলকে। এদের মধ্যেও অনেকেই আবার প্রাক্তনী। ১৮ অগস্ট গ্রেফতার পুলিশের জালে ধরা পড়ে নাসিম আক্তার, হিংমাশু কর্মকার, সত্যব্রত রায় নামে তিন পড়ুয়া।
আরো পড়ুন – উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ সিনিয়র ছাত্রকে হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ উপাচার্যের,
এদিন আদালতে আবার সরকারি আইনজীবীকে স্পষ্ট বলতে শোনা যায়, এরা প্রত্যেকেই সফল অপরাধী, কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা। তাঁর দাবি, অপরাধ ওরা সকলে একসঙ্গে করেছে। প্রত্যেকেই অপরাধের সঙ্গে কোনও না কোনওভাবে যুক্ত। প্রত্যেকেই তদন্তের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। একইসঙ্গে তাঁর এও দাবি, পুলিশের তদন্ত একদমই ঠিকঠাকভাবে এগোচ্ছে। শীঘ্রই রহস্যের আড়ালে থাকা গল্প সামনে আসবে। সূত্রের খবর, শুনানি চলাকালীন বারবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন ধৃত সত্যব্রত রায়। স্পষ্ট বলেছেন, “আমি ওই হোস্টেল এই থাকি না। আমাকে সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়েছিল। আমি তদন্তে সাহায্য করার জন্য গিয়েছিলাম। আমি এমএ করছি। আমার এই ঘটনার সঙ্গে কোনো লিঙ্ক নেই।” যদিও সকলের সওয়াল জবাব শোনার পর আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত শুক্রবার ধৃত তিনজনের পুলিশ হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।