মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে তাই মাতৃযান অ্যাম্বুল্যান্স সাজিয়ে ফেললেন বাবা

কোলে এসেছে ফুটফুটে কন্যাসন্তান । বাবার আনন্দ ধরে না। মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে তাই মাতৃযান অ্যাম্বুল্যান্স সাজিয়ে ফেললেন বাবা। গল্প কথা? আজ্ঞে না। একেবারে বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটেছে লালমাটির জেলায়।

একেবারে হালেই মেয়ের বাবা হয়েছেন নুরুল। সাঁইথিয়া ব্লক হাসপাতালে জন্মেছে খুদে। আবেগপ্রবণ নুরুল বললেন, ‘আমার মেয়ে হয়েছে। আমি খুব খুশি।’ আনন্দে মানুষ অনেক কিছুই করেন। নাসিরুল ভাবলেন, খুদে সদস্যাকে হইহই করে বাড়ি নিয়ে আসবেন। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। ফুল ও বেলুন দিয়ে সাজল মাতৃযান অ্যাম্বুল্যান্স। মেয়ের বাবার কথায়, ‘আমার মেয়েকে সাজানো গাড়িতে করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’ কন্যাসন্তানকে সাদরে বাড়ি নিয়ে আসার এমন ছবি দেখে পাড়াপড়শিদের অনেকে অবাক, কেউ কেউ আড়ালে চোখও মুছলেন। এই পৃথিবীর সর্বত্রই তা হলে কন্যাসন্তান ব্রাত্য নয়?
‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’, সেই কবে ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যে ঈশ্বরী পাটনি-র মুখ দিয়ে মা-বাবার মনের কথাটি বলে গিয়েছিলেন রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র। পুত্র বা কন্যা নির্বিশেষে সন্তানের মঙ্গলকামনাই সেখানে শেষ কথা। বাস্তবে অবশ্য পুত্রসন্তানের কামনায় আজও নানা ঘটনার কথা শোনা যায়। কোনও কোনও পরিবারে পুত্রসন্তানের জন্মের খবর আনন্দের আলাদা স্রোত বইয়ে দেয়।অন্য দিকে, ‘কন্যাদায়’ আজও ‘বড় দায়’ বলে মনে করেন অনেকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘দেনাপাওনা’ গল্পের কথা হয়তো অনেকের মনে থাকবে। পণের দাবি না মেটানোয় গল্পের অন্যতম চরিত্র ‘নিরুপমা’ ও তাঁর বাবার উপর যে অত্যাচার চলে, তা পড়ে চোখে জল আসেনি এমন পাঠক প্রায় নেই বললেই চলে। সমস্যার বিষয় হল, ছবিটা শুধু এই রাজ্যের নয়। দেশের নানা প্রান্তে কম-বেশি এ ধরনের ঘটনার কথা শোনা যায় ২০২৩ সালেও। কিন্তু বাস্তব অন্য কথা বলছে।