বগটুইকাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল ,গ্রামে যাবেন শুভেন্দু, বিজেপির পাল্টা শহিদ বেদি তৈরি করছে তৃণমূলও

বগটুইকাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল ,গ্রামে যাবেন শুভেন্দু, বিজেপির পাল্টা শহিদ বেদি তৈরি করছে তৃণমূলও , বগটুইকাণ্ডের এক বছর পার, তার আগেই বীরভূমের ওই গ্রামকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়ে গেল। বগটুই দিবসের কথা মাথায় রেখে বিজেপি যে কর্মসূচি নিয়েছে, তাতে হাজির থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুর ৩টে নাগাদ বগটুই আসবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। শহিদ বেদিতে মাল্যদান করে গত ২১ মার্চের ঘটনায় নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। পিছিয়ে নেই শাসকদল তৃণমূলও। বিজেপির তৈরি করা শহিদ বেদির কাছেই বেদি তৈরি করছে তৃণমূলও। নির্মীয়মাণ ওই বেদিতে মাল্যদান করেই তৃণমূল মঙ্গলবার তাঁদের কর্মসূচি শুরু করবে।

 

 

 

২০২২ সালের ২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে বোমার আঘাতে খুন হন বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেই খুনের পর রাতে বগটুই গ্রামে বহু বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তার জেরে ১০ জনের মৃত্যু হয়। গত জুন মাসে বগটুইকাণ্ডের প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই। পরে তদন্তকারী সংস্থার তরফে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করা হয়। বগটুইয়ের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। গত ২২ মার্চ এই ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনের বিরুদ্ধে। গত ২৪ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আনারুলকে গ্রেফতার করা হয়। ২৫ মার্চ কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে এই ঘটনায় তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই। ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন তদন্তকারীরা। গত ১২ ডিসেম্বর সিবিআই ক্যাম্পেই ঝুলন্ত দেহ মেলে বগটুইকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত লালন শেখের। এই মৃত্যু নিয়েও রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে ওঠে।

 

 

 

 

 

 

 

গত বছরের ২১ মার্চের ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন মিহিলাল শেখের পরিবারের সদস্যেরা। সেই মিহিলালের বাড়ির সামনেই শহিদ বেদি তৈরি করেছে বিজেপি। শুক্রবার দেখা যায়, ওই বেদির পাশেই আর একটি শহিদ বেদি তৈরি হচ্ছে। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, ওই বেদি তৈরি করছে তৃণমূল। তৃণমূলের স্থানীয় ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন যে, তাঁরাই এই বেদি তৈরি করছেন। মিহিলাল জানিয়েছেন, বিজেপির শহিদ বেদি নির্মাণের বিষয়টি তিনি জানেন। তবে তৃণমূলের শহিদ বেদি তৈরির বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেছেন মিহিলাল। খানিক ক্ষোভের সুরেই তিনি বলেন, “শাসকদলের তরফে আগেই এই বেদি তৈরি করা উচিত ছিল। এত দিন পর কেন তা হচ্ছে জানি না।”

 

আরও পড়ুন –

 

 

গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা হাসেম শেখও জানান, স্থানীয় বিধায়ক অনেক আগেই এখানে শহিদ বেদি তৈরি করায় উদ্যোগী হতে পারতেন। তৃণমূলের তরফে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পর রাজ্য প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে ছিলেন। শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতেই তাঁরা বেদি নির্মাণ করছেন বলে জানান তৃণমূলের ব্লক সভাপতিও। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন নন্দীগ্রামের পর বেদি-রাজনীতি শুরু হতে চলেছে বগটুইয়েও। শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম দিবসে পৃথক পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে তৃণমূল এবং বিজেপি। এক পক্ষের কর্মসূচি শেষ হলে অপর পক্ষ বেদি ধুয়ে কর্মসূচি পালন করছে, এমন দৃশ্যও দেখা গিয়েছে।