সকাল ৬ টায় তদন্তের জন্য পৌঁছালেন, আর বেরোলেন রাত পনে দুটোই। পুর নিয়োগ মামলায় এদিন প্রায় ১৯ ঘন্টা ধরে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালালো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল ইডি। চলল ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ।
বৃহস্পতিবার কাকভোরে সকাল ৬ টা নাগাদ ইডির একটি টিম পৌঁছায় খাদ্যমন্ত্রী রথিন ঘোষের মাইকেল নগরের বাড়িতে। তারপর কেটে গেছে সারাদিন। চলেছে সারাদিন ধরে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ। এরপর এদিন মধ্যরাত পনে দুটোর সময় জিজ্ঞাসাবাদ সেরে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরোয় ইডি। এদিন রথিন ঘোষের পাশাপাশি এছাড়াও আরও ৯ জনের বাড়ি এবং চারটি পুরসভাতেও ম্যারাথন তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির অফিসাররা।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বকাপের আগেই বড়ো ধাক্কা, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত শুভমন গিল
কী জিগ্যেস করা হল তাঁকে, কী জানতে চাওয়া হল ? খাদ্যমন্ত্রী জানালেন, ‘যা জানতে চাওয়া হয়েছে সব বলেছি’ । তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই ইডির অভিযান। এরই মধ্যে ইডি-বিরোধী রব তুলেছে তাঁর সমর্থকেরা। উঠেছে ‘ভাগ ইডি ভাগ’ স্লোগান।
বৃহস্পতিবার, সকাল ৬টা নাগাদ মাইকেলনগরে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যান ED-র অফিসাররা। ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তৃণমূল পরিচালিত মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন রথীন ঘোষ। অন্যদিকে ED সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ২০১৪ থেকে ২০১৮-র মধ্যে পুরসভাগুলিতে নিয়োগ-দুর্নীতি হয়েছে। সূত্রের খবর, এদিন প্রথমেই খাদ্য়মন্ত্রীর মোবাইল ফোন নিয়ে নেন ED অফিসাররা। খতিয়ে দেখা হয় তাঁর ল্যাপটপ। এদিন বিকেলে মধ্যমগ্রাম পুরসভাতেও যায় ED-র টিম।
বৃহস্পতিবার পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বিশেষ সক্রিয় হয়ে ওঠে ইডি। কাকভোরে হানা খোদ মন্ত্রীর বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। দিনভর ১৩ জায়গায় তল্লাশি চলে। এক কথায় যাকে বলে ম্য়ারাথন রেড! একই দিনে খাদ্য়মন্ত্রী ও মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্য়ান রথীন ঘোষের বাড়ি থেকে শুরু করে, আরও সাতজন প্রাক্তন ও বর্তমান চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, এক পুরকর্মীর বাড়ি এবং একজন IAS অফিসারের ফ্ল্যাটে হানা দেয় ED। এছাড়াও মধ্যমগ্রাম পুরসভা, দক্ষিণ দমদম, কামারহাটি ও কাঁচরাপাড়া পুরসভাতেও তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা।
খাদ্য়মন্ত্রী রথীন ঘোষের আগে, ভোর ৫টায়, তৃণমূল পরিচালিত কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার বেলঘরিয়ার বাড়িতে যায় ED-র টিম। এদিন বেলায় ১২টা নাগাদ, কামারহাটি পুরসভাতেও যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। তার আগে সকাল ৭টা নাগাদ, টিটাগড় পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরীর বাড়িতেও হানা দেয় ED। এর পাশাপাশি, কাঁচরাপাড়া পুরসভাতেও যান ED-র আধিকারিকরা। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর, ওই পুরসভার কর্মী মিজানুর রহমানের বাড়িতেও যান তাঁরা।
এছাড়াও তৃণমূল পরিচালিত বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক এবং ওই পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্য চৌধুরীর বাড়িতেও এদিন তল্লাশি চালায় ED। এদিন দক্ষিণ দমদম পুরসভার পাশাপাশি,সেখানের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্ত, এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাচু রায়ের বাড়িতেও হানা দেয় ED। পুর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মামলায় IAS অফিসার জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায়ের সল্টলেকের ফ্ল্যাটেও যায় ইডি। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে এক দিনে ১৩ জায়গায় তল্লাশি চালালেন, ED-র মোট ৮০ জন অফিসার। কিন্তু, পুর নিয়োগ দুর্নীতির মাথার খোঁজ কি মিলবে?