বেআইনিভাবে বসবাসের অভিযোগে গ্রেফতার ৬ বাংলাদেশী। দালাল মারফত ভারতে প্রবেশ করে অবৈধভাবে ভারতে বসবাস্ করার অভিযোগে হুগলী জেলার ব্যান্ডেল এলাকা থেকে ৬ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করলো হুগলীর চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ। অভিযোগ শুধু বসবাস করাই নয়, তারা ভারতীয় জাল আধার ও প্যান কার্ডও তৈরি করেছিল।
ধৃতদের গতকাল শনিবার হুগলীর চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে প্রত্যেককে আলাদা আলাদা করে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত ৬ জন বেশ কিছুদিন আগে বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে বেআইনিভাবে ভারতে এসেছিল। তারপর তারা ব্যান্ডেলের একটি আবাসনে থাকতে শুরু করে। জানা যায়, তারা ওই আবাসনে থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সেভাবে মিশতেন না। যারফলে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। এরপরেই খবর যায় পুলিশে। গোপনে ছ’জনের উপর নজরদারি চলতে থাকে। এরপর শুক্রবার রাতে ওই আবাসনে ব্যান্ডেল থানার নেতৃত্বে অভিযান চলে। গ্রেপ্তার করা হয় ৬ জনকে।
দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা স্বীকার করে নেয়, তারা বাংলাদেশ থেকে বেআইনিভাবে ভারতে এসেছে। কেউ পেট্রাপোল, কেউ আগরতলা ও আবার কেউ ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকেছে। জানা গেছে ধৃত ৬ জনের কেউ সাত থেকে আট মাস আগে আবার কেউ দুই থেকে তিন মাস আগে বাংলাদেশি এজেন্টের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করে। ধৃতেরা পুলিশের কাছে দাবি করেছে, দুবাইতে কাজ দেওয়ার নাম করে দালাল চোরাপথে তাদের পশ্চিমবঙ্গে এনেছে। এরপর নাম ভাঁড়িয়ে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ডের মতো ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করিয়ে দেয় দালাল।
আর ও পড়ুন হিন্দু বিবাহ আইনের কথা স্মরণ করে দিয়ে শোভনকে হুঁশিয়ারি রত্নার
হুগলী জেলার ব্যান্ডেল এলাকার যে ফ্ল্যাটে ওই ছয় বাংলাদেশীরা থাকতেন সেই ফ্ল্যাটের মালিক আকাশ দাসই দালাল বলে তাঁদের দাবি। আকাশ নদিয়ার হালিশহরের বাসিন্দা। বাংলাদেশি যুবকদের রাখার জন্যই ব্যান্ডেলের ফ্ল্যাটটি সে কিনেছিল বলে চন্দননগর কমিশনারেটের তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, ওই ‘দালালের খোঁজ মেলেনি। তবে তাকে ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রিন পার্কের একটি আবাসনের চার তলার একটি ফ্ল্যাটে বেশ কিছু দিন ধরেই ওই ছয় যুবক থাকছিল। এলাকায় তারা মেলামেশা করত না। তাদের দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের কৌতূহল জাগে। এরপরেই তারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ জানায়, ধৃত ছয় বাংলাদেশীদের নাম রুহুল আমিন ওরফে বিশ্বজিত মণ্ডল, সোহেল রানা ওরফে রতন মণ্ডল, মৃদুল ব্যাপারী ওরফে মৃদুল দাস, মিঠুন দাস এবং তাপস দাস। দালালই তাদের ভারতের পরিচয়পত্র তৈরি করিয়ে দেয়।
দুবাইতে চাকরি অথবা টাকা ফেরতের দাবি জানালে আকাশ তাদের হুগলি, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনায় কাপড়ের দোকান বা মুদিখানায় কাজে লাগিয়ে দেয়। এদিকে ছয় বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেফতারের পর তাদের ভারতীয় পরিচয়পত্র পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে বলেও জানা গিয়েছে।