মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি বিজড়িত সোদপুরে ৭৬ তম তিরোধান দিবস পালন। সোদপুর স্টেশন লাগোয়া খাদি আশ্রমে ঘটা করে পালিত হল মহাত্মা গান্ধীর ৭৬ তম তিরোধান দিবস। জানা গিয়েছে, স্বাধীনতার পুর্বে ১৯২৪ সালে সতিশ দাসগুপ্ত সোদপুরের এই জমিতেই খাদি আশ্রমটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরপর থেকে পূর্ব ভারতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াইয়ে এটিই ছিল বিপ্লবীদের কাছে অন্যতম মূল কেন্দ্রস্থল। এখান থেকেই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা তাদের সমস্ত বিপ্লবী কাজকর্ম পরিচালনা করতেন।
গান্ধীজী সোদপুরের এই আশ্রমে কয়েক বার এসেছিলেন। তাছাড়া তিনি সোদপুরের খাদি আশ্রমটিকে নিজের দ্বিতীয় ঘর বলেও চিহ্নিত করেছিলেন। কালের বিবর্তনে গান্ধী বিজড়িত সোদপুরের খাদি আশ্রমটি আজ কিছুটা অংশ ভগ্নদশায় পরিনত। তাই গান্ধীজির ৭৬ তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে এদিন আশ্রমে তার মুর্তীতে মালা পরিয়ে ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ ও পানিহাটির পুরপ্রধান মলয় রায়। এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে অসংখ্য গান্ধী অনুরাগীদের উপস্থিত ছিল চোখে পড়ার মতো। অনুষ্ঠানে রামধনু সংগীতও পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, অনেক আগেই গান্ধী স্মৃতি বিজড়িত খাদি আশ্রমটিকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু এটির রক্ষনাবেক্ষনের ক্ষেত্রে এখানকার ট্রাস্টি বোর্ডের যে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল,তা তারা করে উঠতে পারেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে খুবই সচেতন। তার কথায় আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই, বিধায়ক,সাংসদ ও স্থানীয় পৌরসভার উদ্যোগে এবং সরকারের অর্থ পাওয়া মাত্রই আর্কিওলজিকাল স্ট্রাকচার বজায় রেখে ঐতিহাসিক খাদি আশ্রমটির রক্ষনাবেক্ষনের কাজ শুরু করে দেওয়া হবে। তাছাড়া এখানে গান্ধীজির একটি স্বারকনিধী গড়ে তোলার পাশাপাশি “লাইট এন্ড সাউন্ড সিস্টেমের” মাধ্যমে এখানকার ঐতিহ্যকেও সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। পুরাতন স্মৃতি রোমন্থন করে নির্মল ঘোষ আরও বলেন, ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য একসময় এই স্থানটি ব্যাবহৃত হয়েছিল।
আরও পড়ুন – অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মুকুট জিতে রেকর্ড গড়েছেন জকোভিচ
গান্ধীজি তার জীবদ্দশায় ছয়বার এখানে এসেছিলেন এবং রাত কাটিয়েছিলেন। ভারতবর্ষের তৎকালীন মহান নেতৃত্বরা এখান থেকেই তাদের বিপ্লবী কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন। গান্ধীজি থেকে শুরু করে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু,পদ্মজা নাইডু,জহড়লাল নেহেরু, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ এমন কোন মহান ব্যাক্তিত্ব নেই যে এই স্থানে আসেননি। তাই মানুষের কাছে ঐতিহাসিক এই আশ্রমটির অতীত ইতিহাস তুলে ধরতে কয়েকদিনের মধ্যেই এটির রক্ষনাবেক্ষনের কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।