মন্ত্রিসভার রদবদল! পর্যটন দফতর হাতছাড়া হয়ে গেল বাবুল সুপ্রিয়ের!

মন্ত্রিসভার রদবদল! পর্যটন দফতর হাতছাড়া হয়ে গেল

মন্ত্রিসভার রদবদল! পর্যটন দফতর হাতছাড়া হয়ে গেল বাবুল সুপ্রিয়ের!এমনটা যে হতে পারে, তা আগেই জানা গিয়েছিল। বাস্তবেও তেমনই ঘটল। তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বাবুল নিজেই সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলেন, তিনি আর পর্যটন দফতরে থাকতে চাইছেন না। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী তাতে অসম্মতি জানাননি।

 

ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাবুল তাঁর ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি দু’টি বিষয় উল্লেখ করেছেন। এক, শূকরের সঙ্গে লড়তে যেও না। কারণ, যুদ্ধে জিতলেও গায়ে পাঁক মাখতে হবে। দুই, নির্বোধের সঙ্গে তর্ক কোরো না। কারণ, প্রথমে সে তোমায় তার স্তরে টেনে নামাবে। তার পরে তার নীচতার অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে তোমার হারিয়ে দেবে।

তার পরেই বাবুল দান ছাড়ার (ওয়াকওভার) কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ”জীবনের কিছু কিছু যুদ্ধে ওয়াক ওভার দিতে হয়। যেখানে তুমি হেরো লোকটাকে জিতিয়ে দিয়ে নির্জনতা এবং মর্যাদার দিকে হেঁটে চলে যেতে পারো।” অনেকেই মনে করছেন, এই পোস্টের মাধ্যমে রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে বিঁধেছেন বাবুল। একই সঙ্গে বুঝিয়েছেন, তিনি ‘দান’ ছেড়ে দিলেন। তার পরে একটি ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ে অবশ্য তিনি বলেছেন, ”আমার এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে নানা ফোন আসছে। এটুকুই বলব, আমার মা কোভিডে মারা গিয়েছিলেন। আমি যে সোসাইটিতে থাকি, সেখানে আমি একটা পাখির বাগান করেছি। সোসাইটির অনুমতি নিয়েই। সেটা নিয়ে জেনারেল বডি মিটিংয়ে অনেক প্রশ্ন ওঠে। অনেকে বলেন, আমি ক্ষমতা জাহির করছি।” বাবুল বলেছেন, ওই বৈঠকে কী চলছিল, সেটা তিনি শোনেন। একটা দৃষ্টিকটু লড়াই হচ্ছিল। সেটা তিনি শুনেছিলেন এবং তার ভিডিয়ো রেকর্ডিংও দেখেছেন। সেই সূত্রেই তাঁর ওই পোস্ট। বাবুলের কথায়, ”আপনারা কে কী ভাবছেন, জানি না। কী জন্য ওই পোস্ট, সেটা জানাতেই এই কথাগুলো বললাম।”

তবে বাবুল যা-ই বলুন, তাঁকে এবং ইন্দ্রনীলকে নিয়ে শাসকদল এবং প্রশাসনের অন্দরে আলোচনা এবং জল্পনা থামছে না। ঘটনাচক্রে, বাবুল এবং ইন্দ্রনীল দু’জনেই পেশাদার গায়ক। বাবুল ছবিতে অভিনয়ও করেছেন। ইন্দ্রনীলের সঙ্গে বাবুলের সম্পর্ক চিরকালই ‘মধুর’। তবে তা কখনও প্রকাশ্যে আসেনি। সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর দু’জনে প্রকাশ্যেই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন বিধানসভার অলিন্দে।

বাবুলের প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেন, ইন্দ্রনীল সরকারি কাজ আটকে দিচ্ছেন। যার জবাবে ইন্দ্রনীল বলেন, বাবুল যেন গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। অসমর্থিত সূত্রের খবর, তার আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পর্যটন দফতর নিয়ে বাবুলকে মৃদু তিরস্কারও করেছিলেন। তারই রেশ এসে পড়ে বৈঠকের শেষে। বাবুল শিবিরের অভিযোগ, পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান হিসেবে ইন্দ্রনীল সমস্ত ফাইল মন্ত্রীকে পাঠাচ্ছিলেন না। যদিও ইন্দ্রনীলের শিবির সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের বরং বক্তব্য, আসল বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং জানেন। সেই জন্যই বাবুল যখন প্রায় সর্বসমক্ষে ইন্দ্রনীলকে বলছেন, কেন তিনি সরকারি কাজ আটকে দিচ্ছেন, তখন ইন্দ্রনীল তাঁকে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাতে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ”ইন্দ্রনীল বেশি কথা না বলে দু’টি সরকারি প্রকল্পের নাম তিন বার বলেছিলেন বাবুলকে। দিদিকে বলো, দিদিকে বলো এবং সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী।”